ব্লগ আর্কাইভস

রাসুলুল্লাহ সাঃ সর্বদা নিজের কাজ নিজে করতেন

রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম

সর্বদা নিজের কাজ নিজে করতেন

মুহাদ্দিস রবিউল বাশার নিজের কাজ নিজে  করা

 

আদর্শ আত্মনির্ভরশীল অন্যতম মানুষ

রাসূলুল্লাহ (সাঃ)।তিনি নিজের কাজ নিজে করতে লজ্জা

করতেন না।

আধুনিকতার ছোঁয়ায় নিজের কাজ নিজে

করতে লজ্জায় মাথা নীচু হয়ে যায়। যে জাতির

লোকেরা নিজের নিজে করে আনন্দ অনুভব

করে, সে জাতি উন্নত। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নিজের

উম্মাহকে আত্মনির্ভরশীল জাতি হিসাবে গড়ে

তোলার জন্য চেষ্টা করেছেন।তিনি বলেছেন

,তোমার ছড়ি যদি ঘোড়ার পিঠে থাকতে পড়ে যায়

,তবে কারো নিকট চেয়ে তুলে নেবে না !

নিজেও আত্মনির্ভরশীলতার আদর্শ রেখেছেন।

(ক) ﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺭﺽ ﻗﺎﻟﺖ ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻌﻢ

ﻳﺨﺼﻒ ﻧﻌﻠﻪ ﻭﻳﺨﻴﻂ ﺛﻮﺑﻪ ﻭﻳﻌﻤﻞ ﻓﻲ ﺑﻴﺘﻪ ﻛﻤﺎﻳﻌﻤﻞ

ﺍﺣﺪﻛﻢ ﻓﻲ ﺑﻴﺘﻪ ﻭﻗﺎﻟﺖ ﻛﺎﻥ ﺑﺸﺮﺍ ﻣﻦ ﺍﻟﺒﺸﺮ ﻳﻔﻠﻲ

ﺛﻮﺑﻪ ﻭﻳﺤﻠﺐ ﺷﺎﺗﻪ ﻭﻳﺨﺪﻡ ﻧﻔﺴﻪ ﺭﻭﺍﻩ

ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ

অর্থ হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি

বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নিজের জুতা নিজে সিলাই

করতেন, পট্টি লাগাতেন। নিজের কাপড় সিলাই

করতেন। তোমাদের কেহ যেমন নিজের ঘরে করে, তেমনি তিনি নিজের ঘরে কাজ করতেন।

হযরত আয়েশা (রাঃ) আরো বলেন, তিনি মানুষের

মধ্যকার একজন মানুষ ছিলেন। তিনি নিজের কাপড়ে

পোকা -মাকড় লেগেছে কিনা নজর রাখতেন।

নিজের বকরীর দুধ দোহন করতেন এবং নিজের সেবা নিজেই করতেন।

(অর্থাৎ অন্যের খিদমাত ও সেবার প্রত্যাশী

ছিলেন না, নিজের সেবার জন্য অন্যের উপর নির্ভরশীল ছিলেন না,নিজের প্রয়োজন নিজে মিটাবার চেষ্টা করতেন। অবশ্য আগ্রহ সহকারে

কেহ সেবা করলে তার মনে ব্যথা লাগার আশংকায় তার সেবায় বাধা দিতেন না। আবার সেবার মানষিকতা

সৃষ্টির জন্য বিশেষ বিশেষ ব্যক্তিকে কোন

কোন কর্মের নির্দেশ দিতেন। হযরত আনাস(রাঃ),

হযরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ(রাঃ)এবং হযরত বিলাল (রাঃ)

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর স্বেচ্ছাসেবক বা স্বইচ্ছায় খাদেম ছিলেন।) (তিরমিযী)

(খ) ﻋﻦ ﺍﻻﺳﻮﺩ ﻗﺎﻝ ﺳﺎﻟﺖ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﻣﺎﻛﺎﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻌﻢ

ﻳﺼﻨﻊ ﻓﻲ ﺑﻴﺘﻪ ﻗﺎﻟﺖ ﻛﺎﻥ ﻳﻜﻮﻥ ﻓﻲ ﻣﻬﻨﺔ ﺍﻫﻠﻪ ﺗﻌﻨﻲ

ﺧﺪﻣﺔ ﺍﻫﻠﻪ ﻓﺎﺫﺍ ﺣﻀﺮﺕ ﺍﻟﺼﻠﻮﺓ ﺧﺮﺝ ﺍﻟﻲ ﺍﻟﺼﻠﻮﺓ ﺭﻭﺍﻩ

ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ

অর্থ হযরত আসওয়াদ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রাঃ) কে জিঙ্গাসা করেছিলাম,

প্রিয় নাবী (সাঃ)নিজ ঘরে কি কাজ করতেন? তখন তিনি

বলেন, নিজের পরিবারের সেবায় অংশগ্রহন করতেন। অর্থাৎ নিজের স্ত্রীদের কাজে সহায়তা করতেন। তারপর যখন নামাজের সময় উপস্থিত হতো, তখন নামাজে চলে যেতেন।

(সহীহ আল -বুখারী)

অনেকে মনে করেন, মেয়ে লোকের কাজ

আমরা করবো কেন? আমাদের কাজ আমরা

করবো, মেয়েলোকের কাজ মেয়ে লোক

করবে। কিন্তু তাদের কোন কোন সহেয়তা

করলে, তাদের মনে তৃপ্তি আসে, মন ভাল লাগে এবং পারিবারিক জীবন শান্তিপুর্ন হয়। পুরুষরা সময় ও

সুযোগ মত বাসার কাজে অংশগ্রহনে অনেক কল্যান আছে।

(গ) ﻋﻦ ﺍﻧﺲ ﺭﺽ ﻳﺤﺪﺙ ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻌﻢ ﺍﻧﻪ ﻛﺎﻥ

ﻳﻌﻮﺩ ﺍﻟﻤﺮﻳﺾ ﻭﻳﺘﺒﻊ ﺍﻟﺠﻨﺎﺯﺓ ﻳﺠﻴﺐ ﺩﻋﻮﺓ ﺍﻟﻤﻤﻠﻮﻙ

ﻭﻳﺮﻛﺐ ﺍﻟﺤﻤﺎﺭ ﺧﻄﺎﻣﻪ ﻟﻴﻒ ﺭﻭﺍﻩ ﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﺔ

অর্থ হযরত আনাস(রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাঃ) থেকে বর্ননা

করেছেন, তিনি রুগী দেখতে যেতেন, সেবা

করতেন, জানা্যার অনুসরন করতেন(গোসল, কাফন

ও দাফন পর্যন্ত থাকতেন।) অনুমতি প্রাপ্ত বা আযাদকৃত দাসের দাওয়াত কবুল করতেন এবং গাধায়

আরোহন করতেন। নিশ্চয় আমি তাঁকে খাইবার যুদ্ধের দিন গাধার পিঠে আরোহিত দেখেছি, যার লাগাম ছিল খেজুরের সালের।

(ইবনে মাযাহ)

তিনি নিজের খিদমাতের প্রত্যাশী ছিলেন না। বরং সুবিধা -অসুবিধা দেখতেন। অন্য অসুস্থ্য হলে দেখতে যেতেন, সম্ভবমত সেবা করতেন,

কোন ব্যক্তি মারা গেলে তার গোসলের নিয়ম কানুন জানানোর জন্য, তার কাফনের জন্য কয়টি কাপড়

এবং কিভাবে দিতে হবে, বুঝানোর জন্য,

গরীবদের দাওয়াতে এমনকি আযাদ করা

গোলামের দাওয়াতে কষ্ট করে অংশ নিতেন। গাধায়

চড়িতে লজ্জা করতেন না। যার লাগাম কোন নামী – দামী জিনিসের ছিল না। বরং খোরমা গাছের ছালের

তৈরী লাগাম ব্যবাহার করেছেন।

(ঙ) তিনি সেবকদের সেবা পাওয়ার জন্য তিরস্কার করতেন না। পরিবারের কেহ তিরস্কার করলে তিনি বাধ সাজতেন।

ﻋﻦ ﺍﻧﺲ ﺭﺽ ﻗﺎﻝ ﺧﺪﻣﺖ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻌﻢ ﻭﺍﻧﺎ ﺛﻤﺎﻥ

ﺳﻨﻴﻦ ﺧﺪﻣﺘﻪ ﻋﺸﺮ ﺳﻨﻴﻦ ﻓﻤﺎ ﻻﻣﻨﻲ ﻋﻠﻲ ﺷﻴﺊ ﻗﻂ

ﺍﺗﻲ ﻓﻴﻪ ﻋﻠﻲ ﻳﺪﻱ ﻓﺎﻥ ﻻﻣﻨﻲ ﻻﺋﻢ ﻣﻦ ﺍﻫﻠﻪ ﻗﺎﻝ ﺩﻋﻮﻩ

ﻓﺎﻧﻪ ﻟﻮ ﻗﻀﻲ ﺷﻴﺊ ﻛﺎﻥ ﻛﺬﺍ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﺼﺎﺑﻴﺢ

অর্থ হযরত আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমার আট বৎসর বয়সে আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে

খিদমাত শুরু করি। আমি তাঁর দশ বৎসর খিদমাত করেছি।

কোন বিষয় আমার হাতে ঘটে গিয়ে থাকলে, সে ব্যপারে তিনি আমাকে কখনো তিরস্কার করেননি। যদি তাঁর পরিবারের কেহ তিরস্কার করেছে, অমনি তিনি বলেছেন, তাকে (তিরস্কার করা) ছেড়ে দাও। কেননা যদি কিছু ফায়সালা থেকে থাকে, তাই হয়েছে।

(মাসাবীহুস সুন্নাহ ও বাইহাকী)