হিজরতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

হিজরাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

মুহাদ্দিস রবিউল বাশার

(৫)রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহন :
মাক্কায় সুদীর্ঘ ১৩ বৎসর ইসলামের দাওয়াত ও
তাবলীগের দায়িত্ব পালন করেন। হিজরাতের পূর্ব
“পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ছিলেন একজন দায়ী ও
মুবাল্লিগ। মাদীনায় হিজরাতের ফলে তিনি হলেন
নুতন ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রনায়ক, রাষ্ট্রপতি,
রাষ্ট্রপরিচালক। তিনি হলেন পৃথিবীর
ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ আদর্শ রাষ্ট্রপতি। আল্লাহ
তায়লা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে শুধু মাদীনার প্রশাসক
নয় !বরং মানবজাতির প্রশাসক
হিসাবে পাঠিয়েছেন। আল্লাহ বলেন,
ﺍﻧﺎ ﺍﻧﺰﻟﻨﺎ ﺍﻟﻴﻚ ﺍﻟﻜﺘﺎﺏ ﺑﺎﻟﺤﻖ ﻟﺘﺤﻜﻢ ﺑﻴﻦ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﺑﻤﺎﺍﺭﺍﻙ
ﺍﻟﻠﻪ ﻭﻻﺗﻜﻦ ﻟﻠﺨﺎﺋﻨﻴﻦ ﺧﺼﻴﻤﺎ
অর্থ :নিশ্চয় আমি তোমার নিকট সত্যসহ কিতাব
অবতীর্ন করেছি যাতে করে তুমি আল্লাহর
দেখানো নিয়ম অনুযায়ী মানুষের মাঝে শাসন
করতে পার। আর তুমি বিশ্বাসঘাতকদের
পক্ষে বিতর্ককারী হয়ো না। (সুরা আন নিসা, আয়াত
নং ১০৫)
(৬)নুতন সংবিধান প্রনয়ন :
হিজরাতের ফলে মাদীনায় ইসলামী রাষ্ট্র গঠিত
হয়। মুসলিম এবং বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মধ্য
শান্তিশৃংখলা ও মানবিক ভ্রাতৃত্বের
লক্ষ্যে বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ (সাঃ) মাদীনার সকল
নাগরিকদের জন্য একটি সংবিধান প্রনয়ন করেন।
পৃথিবীর ইতিহাসে উহা “মাদীনা সনদ
“নামে সর্বপ্রথম লিখিত সংবিধান হিসাবে স্বীকৃত।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কত দুরদর্শী ছিলেন,
তা “মাদীনা সনদের”মাধ্যমে অনুভব করা যায়।
মাদীনার নুতন সংবিধান হলো ইসলামী শারীয়ার
অংশবিশেষ। তাই আল্লাহ বলেন,
ﺛﻢ ﺟﻌﻠﻨﺎﻙ ﻋﻠﻲ ﺷﺮﻳﻌﺔ ﻣﻦ ﺍﻻﻣﺮ ﻓﺎﺗﺒﻌﻬﺎ ﻭﻻﺗﺘﺒﻊ
ﺍﻫﻮﺍﺀ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﻻﻳﻌﻠﻤﻮﻥ
অর্থ :আমি তোমাকে দ্বীনের এক বিশেষ শারীয়াতের
উপর রেখেছি। অতএব তুমি এই শারীয়াতের অনুসরন
কর এবং অঙ্গলোকদের প্রবৃত্তির-খেয়াল-খুশীর
অনুসরন করনা। (সুরা আল জাসিয়াহ, আয়াত নং ১৮)
(৭)হিজরাত স্থানের নুতন নামকরন :
রাসুলুল্লাহ(সাঃ) এবং মুহাজিরগন(রাঃ)
যেখানে হিজরাত করে আসেন, তার নাম ছিল
“ইয়সরিব”।বিশ্বনাবী মুহাম্মাদ(সাঃ)
সেখানে হিজরাতের ফলে শ্রেষ্ঠনাবীর
সম্মানার্থে ইয়াসরিববাসি তাদের শহরের নাম
রাখেন “মাদীনাতুন-নাবী (সাঃ) “বা নাবীর শহর।
পরবর্তীকালে ইয়াসরিব
মাদীনা নামে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করে।
মাদীনার পুর্ব নাম ইসরিব ছিল, তা পবিত্র কুরআনেই
আছে। খন্দকের কঠিন যুদ্ধের সময় একদল মুনাফিক
বলেছিল, ﻳﺎﺍﻫﻞ ﻳﺜﺮﺏ ﻻﻣﻘﺎﻡ ﻟﻜﻢ ﻓﺎﺭﺟﻌﻮﺍ
অর্থ :হে “ইয়াসরিব” বাসি, এটা তোমাদের টিকবার
স্থান নয়। অতএব তোমরা ফিরে চলো। (সুরা আল
আহযাব, আয়াত নং১৩)
মাদীনা নামকরনের কথা পবিত্র কুরআনে উল্লেখ
আছে। আল্লাহ বলেন,
ﻭﻣﻦ ﺍﻫﻞ ﺍﻟﻤﺪﻳﻨﺔ ﻣﺮﺩﻭﺍ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻨﻔﺎﻕ
অর্থ : “মাদীনা “বাসিদের কিছু সংখ্যক
ব্যক্তি মুনাফিকিতে সুদৃঢ়। (সুরা আত- তাওবা, আয়াত
নং ১০১)

About আলোর কাফেলার সঙ্গী

আমি একজন মুবাল্লিগ ... আল্লাহ আমাকে কবুল করুন. আমিন

Posted on অক্টোবর 28, 2014, in হিজরতের গুরুত্ব. Bookmark the permalink. এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান.

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান