Category Archives: রাসূলুল্লাহ সাঃ এর আদর্শ

বিপদে দোয়া কবুল ঘটনা ১

একদা হযরত ওমর ফারুক (রা:)
একদা হযরত ওমর ফারুক (রা:) মদীনার কোন
এক গলিপথ দিয়ে হেঁটে চলছিলেন। হঠাৎ
একটি যুবকের প্রতি তাঁর দৃষ্টি পড়ে গেল। সে
তার পরিহিত বস্ত্রের নীচে একটি বোতল
লুকিয়ে রেখেছিল। হযরত ওমর (রা:) তাকে
জিজ্ঞেস করলেন, হে যুবক! তুমি তোমার
বস্ত্রের নীচে কি ঢেকে রেখেছ ?
বোতলটি মদ ভর্তি ছিল; সুতরাং যুবকটি জবাব
দিতে ইতস্তত: করছিল; কিন্তু সে তখন আত্ম
অনুশোচনায় ও ভয়-ভীতিতে বিহবল অবস্থায়
আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করল:
হে মাবুদ ! আমাকে তুমি খলিফা ওমর (রা:)
এর সামনে লজ্জিত করো না।তাঁর কাছ থেকে
ত্রুটি ও অপরাধ গোপন রাখ। আমি তোমার
নিকট খাঁটি তওবাহ করছি এবং এই
প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, জীবনে আর কোনদিনই
আমি মদ স্পর্শ করবো না। এরুপ তওবাহ করার
পরক্ষণেই যুবক হযরত ওমর (রা:) এর প্রশ্নের
জবাব দিল যে, হে খলিফা! আমার কাছে এটি
একটি সিরকার বোতল; কিন্তু খলিফা তার
কথায় পূর্ণ আস্থা না এনে বোতলটি দেখতে
চাইলেন। তাঁর ইচ্ছানুযায়ী তখন বোতলটি তার
সামনে পেশ করা হল।দেখা গেল যে,
বোতলটি মধ্যে সত্যিই সিরকা ভর্তি রয়েছে।
কেউ এভাবে ভীত মনে কোন লজ্জাজনক ও
পাপকাজ থেকে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ
জানালে এবং খাঁটি তাওবাহ করে নিলে
আল্লাহ পাক এক বস্তুকে অপর বস্তুতে পরিণত
করেও ফরিয়াদির পাপ মার্জনা করে দেন
এবং তার মান সম্মান পর্যন্ত অক্ষুণ্ন রাখেন।
(মুকাশাফাতুল ক্বুলুব)

রোযা ভঙ্গের গ্রহণ যোগ্য কারণ কি কি

প্রশ্নঃ (৩৯৮) রোযা ভঙ্গের গ্রহণযোগ্য
কারণ কি কি?
উত্তরঃ রোযা ভঙ্গের কারণ সমূহ হচ্ছেঃ
১) অসুস্থতা,
২) সফর। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে।
আল্লাহ্ বলেন,
ﻭَﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﻣَﺮِﻳﻀًﺎ ﺃَﻭْ ﻋَﻠَﻰ ﺳَﻔَﺮٍ ﻓَﻌِﺪَّﺓٌ ﻣِﻦْ ﺃَﻳَّﺎﻡٍ ﺃُﺧَﺮَ
আর যে ব্যক্তি অসুস্থ হবে অথবা সফরে
থাকবে (সে রোযা ভঙ্গ করে) অন্য দিনে তা
কাযা আদায় করে নিবে।(সূরা বাক্বারাঃ
১৮৫)
৩) গর্ভবতী নারীর নিজের বা শিশুর
জীবনের আশংকা করলে রোযা ভঙ্গ করবে।
৪) সন্তানকে দুগ্ধদানকারীনী নারী যদি
রোযা রাখলে নিজের বা সন্তানের
জীবনের আশংকা করে তবে রোযা ভঙ্গ
করবে।
৫) কোন বিপদগ্রস্ত মানুষকে বাঁচাতে গিয়ে
রোযা ভঙ্গ করা: যেমন পানিতে ডুবন্ত
ব্যক্তিকে উদ্ধার, আগুন থেকে বাঁচাতে
গিয়ে দরকার হলে রোযা ভঙ্গ করা।
৬) আল্লাহ্র পথে জিহাদে থাকার সময়
শরীরে শক্তি বজায় রাখার জন্য রোযা ভঙ্গ
করা। কেননা নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) মক্কা বিজয়ের সময়
ছাহাবীদেরকে বলেছিলেন,
ﺇِﻧَّﻜُﻢْ ﻣُﺼَﺒِّﺤُﻮ ﻋَﺪُﻭِّﻛُﻢْ ﻭَﺍﻟْﻔِﻄْﺮُ ﺃَﻗْﻮَﻯ ﻟَﻜُﻢْ ﻓَﺄَﻓْﻄِﺮُﻭﺍ
আগামীকাল তোমরা শত্রুর মোকাবেলা
করবে, রোযা ভঙ্গ করলে তোমরা অধিক
শক্তিশালী থাকবে, তাই তোমরা রোযা ভঙ্গ
কর।[6]
বৈধ কোন কারণে রোযা ভঙ্গ করলে দিনের
বাকী অংশ রোযা অবস্থায় থাকা আবশ্যক
নয়। কেননা সে তো গ্রহণযোগ্য ওযরের
কারণেই রোযা ভঙ্গ করেছে। এজন্য এ
মাসআলায় বিশুদ্ধ কথা হচ্ছেঃ কোন রুগী
যদি অসুস্থতার কারণে দিনে রোযা ভঙ্গ
করে আর দিন শেষ হওয়ার আগেই সুস্থ হয়ে
যায়, তবে দিনের বাকী অংশ রোযা
অবস্থায় থাকার কোন আবশ্যকতা নেই। কোন
মুসাফির যদি রোযা ভঙ্গ অবস্থায় দিন
থাকতেই সফর থেকে ফিরে আসে তারও
দিনের বাকী অংশ রোযা অবস্থায় থাকার
আবশ্যকতা নেই। অনুরূপ বিধান ঋতুবতী
নারীর। কেননা এরা সবাই বৈধ কারণে
রোযা ভঙ্গ করেছে। তাই ঐ দিবস তাদের
জন্যই। তাতে তাদের প্রতি ছিয়ামের
আবশ্যকতা নেই। কেননা শরীয়ত তাদেরকে
রোযা ভঙ্গের অনুমতি প্রদান করে আবার তা
আবশ্যক করবে না।
এর বিপরীত মাসআলা হচ্ছে, রামাযান
মাসের চাঁদ দেখা গেছে একথা যদি দিনের
বেলায় প্রমাণিত হয়, তবে খবর পাওয়ার
সাথে সাথে রোযার নিয়ত করে নিতে হবে
এবং দিনের বাকী সময় রোযা অবস্থায়
কাটাতে হবে। উভয় মাসআলায় পার্থক্য
সুস্পষ্ট। কেননা যখন কিনা দিনের বেলায়
রামাযান মাস শুরু হওয়ার কথা প্রমাণিত
হয়েছে, তখন তাদের উপর সে দিনের ছিয়াম
পালন করা ওয়াজিব হয়ে গেছে। কিন্তু না
জানার কারণে তাদের ওযর গ্রহণযোগ্য এবং
তাদের ছিয়াম বিশুদ্ধ। এই কারণে তারা যদি
জানতে পারত যে আজ রামাযান শুরু হয়েছে,
তবে রোযা রাখা তাদের জন্য আবশ্যক হত।
ফজর হওয়ার পর যদি জানতে পারে যে
রামাযান মাস শুরু হয়েছে, তখন কি করবে?