Daily Archives: মে 18, 2015

প্রেম করার গুরুত্ব পূর্ণ টিপস

mina zulfiker আমার দূর আত্মীয়ের মেয়ের সাথে শারীরিক
সম্পর্ক ছিল। মেয়ের মা মেয়েকে বলেছে
সে যেন আমাকে ছেড়ে দেয়, কারন আমি তার
মায়ের কাছে খারাপ চরিত্রের মানুষ। আমি তার মায়ের
সাথে খারাপ আচরণ করেছি, তার জন্য আমার
অনুশোচনা হয় এবং তার কাছে ক্ষমা চেয়েছি। আমি
তার মায়ের পা ধরে ক্ষমা ভিক্ষা চেয়েছি। মেয়ের
মা বলেছেন, তিনি আমাকে ক্ষমা করেছেন, কিন্তু
তার মেয়ের সাথে আমার বিয়ে দেবেন না। তার
মেয়ে আমার সাথে ছিল ৫ বছর ধরে এবং আমরা যিনা
করেছি অগণিত বার, যার জন্য আমরা অনুশোচনা করি
এবং আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা চাই। মেয়েটি আমার সাথে
সৎ ছিল এবং আমিও তার সাথে সৎ ছিলাম, সে বলেছিল
আমরা দুজন বিয়ে করব কারন আমরা যিনা করেছি। তার
পর আমি তার মায়ের সাথে খারাপ আচরণ করি এবং তার
পা ধরে ক্ষমা চাই, তার পর তাঁর মেয়ে আমার সাথে
ছিল প্রায় ১ বছর ৬ মাস। তার মা তাকে প্রতিনিয়ত
বলতে থাকে আমাকে ত্যাগ করার জন্য, কিন্তু সে
আমাকে ত্যাগ করেনা কারন সে আমার সাথে সৎ ছিল
এবং যেহেতু আমরা যিনা করেছি এবং যেহেতু আমরা
একে অপরকে বিয়ে করতে চাই। কিন্তু হঠাৎ করে
সে বলল, সে আমার সাথে থাকতে পারবে না এবং
আমাকে ছেড়ে চলে যায়। এক বছর ধরে আমি
খুব চেষ্টা করেছি মেয়ের সাথে যোগাযোগ
করার জন্য, এমন কি তাকে আমি কিছু হুমকিও দিয়েছি
(শুধু এই কারনে যে, সে আমার সাথে কথা বলবে
যেন আমি তাকে বুঝাতে পারি যে, আমি ভবিষ্যতে
ঐরূপ আচরণের পুনরাবৃত্তি করব না এবং তার কথা মত
কাজ করব) কিন্তু সে আমার সাথে যোগাযোগ
করেনি এবং আমার সাথে কথা বলেনি তারপর
থেকে। আমি জানি না, তার মা মানুষিক ভাবে তাকে
বিভ্রান্ত করছে কিনা এই বলে যে তিনি ব্যথা অনুভব
করছেন তার বাঁ হাতে (যেন সে ভাবে তার মা হৃদ
রোগে আক্রান্ত হচ্ছে) অথবা তার থেকে
প্রতিজ্ঞা করে নিয়েছে যে সে আমার সাথে
কথা বলবে না। আমি সঠিক জানি না। কিন্তু তার মা তাকে
বিভ্রান্ত করত অন্যান্য মানুষের খারাপ ঘটনার মাধ্যমে,
যেমন কেউ তার স্ত্রীকে শারীরিক ভাবে
আঘাত করে এবং কেউ স্ত্রীকে ছেড়ে চলে
গেছে এবং কেউ তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছে
ইত্যাদি। তিনি এ কথাও বলেছেন যে তিনি কোন এক
বাবাকে (কোন ধার্মিক মানুষ হতে পারে) জিজ্ঞাসা
করেছেন আমি বিয়ের পর মেয়েকে ছেড়ে
দিব। আমি জানি যে অদৃশ্য কেউ বলতে পারে না।
১. Sir, আমার প্রশ্ন হল: বিয়ে করা কি সমাধান নয় যদি
আমরা যিনা করে থাকি? আমাদের গুনাহ্ কি কমে যাবে
না, যদি আমরা বিয়ে করি?
২. আমরা যদি বিয়ে না করি, আমাদের গুনাহ্ কি আল্লাহ্
ক্ষমা করবেন যদি আমরা দুজন ১০০ টি চাবুকের শাস্তি
গ্রহণ করি? অথবা শুধু আল্লাহ্র কাছে তার ক্ষমা
প্রার্থনা করলেই কি চলবে, ১০০ টি চাবুকের শাস্তি
গ্রহণ করা ছাড়া?
৩. মেয়ে আমাকে বিয়ে করতে চায় কিন্তু যদি তার
মা বিয়ে দিতে না চায় তবে আমাদের ক্ষেত্রে কি
একই ১০০ টি চাবুকের শাস্তি প্রযোজ্য হবে?
৪. মেয়ে যদি তার মায়ের জন্য বিয়ে করার
ক্ষেত্র মত পরিবর্তন করে, যেখানে আমি বিয়ে
করতে চাচ্ছি, মেয়ের সাথে যিনা করার পাপের
জন্য। মেয়ে যদি বিয়ে করতে না চায় এই
জেনেও যে, তার উচিত বিয়ে করা যার সাথে সে
যিনা করেছে। এই ক্ষেত্রে মেয়ে এবং
ছেলের গুনাহে্র পরিমান কি হবে?
৫. তার মায়ের জন্য মেয়ে যদি বিয়ে না করে,
তাহলে বিয়ে না করার জন্য যে গুনাহ্ করা হচ্ছে এই
ক্ষেত্রে কে গুনাহ্গার হবে, মেয়ে নাকি মা?
৬. মেয়ে যদি বিয়ে করতে না চায়, ছেলের
ক্ষেত্রে যিনার করার জন্য কি ধরনের গুনাহ্ হবে
যেখানে ছেলে বিয়ে করতে রাজি?
আমি আপনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকব, যদি আপনি আপনার
মূল্যবান সময় ব্যয় করেন আমার প্রশ্নের উত্তর
দেয়ার ক্ষেত্রে।
সকল প্রশংসা একমাত্র আল্লাহ্র।
প্রথমত:
আপনার বুঝা উচিত আপনার সমস্যা আছে নিজের
ধর্মীয় প্রতিশ্রুতির উপর এবং যা সব থেকে
দুর্ভোগের বিষয়। আপনার আরও বুঝা উচিত যিনার মত
খারাপ কাজ হচ্ছে, বিভিন্ন কবিরা গুনাহের মধ্যে একটি,
যা আল্লাহ্ তার বান্দাহ্দের করতে নিষেধ
করেছেন এবং তাদের কাছে তুলে ধরেছেন
এর শাস্তি। মহান আল্লাহ্ বলেছেন:
আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা
অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ (যা জাহান্নামের পথে
ধাবিত করে, যদি না আল্লাহ্ ক্ষমা করেন)…[সূরা আল-
ইসরা, আয়াত-৩২]
শায়েখ আল-সা’আদি (রহ:) বলেছেন:
তা করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার চেয়ে অনেক
বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এর কাছে আসার
ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা অথবা এর সম্মুখীন হওয়ার
ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা, কারন তাতে সব কিছু আছে
যা তার দিকে ধাবিত করে এবং উৎসাহিত করে। যে
পবিত্র স্থানে পশুর পাল চরায়, সে খুব শীঘ্রই তার
সীমা লংঘন করবে, মূলত এই ক্ষেত্রে। এই
প্রবণতা অধিকাংশ মানুষের মধ্যে অনেক বেশি।
আল্লাহ্ যিনা এবং এর ঘৃণিত রুপকে বর্ণনা করেছেন
“ফাহিসা’হ্” বলে অথবা যা শরিয়ত মতে, যুক্তি বা সাধারন
জ্ঞানে একটি ঘৃণিত কবিরা গুনাহ্, কারন তা আল্লাহ্র
অধিকারের ক্ষেত্রে, মহিলার অধিকারের
ক্ষেত্রে এবং তার পরিবার অথবা তার স্বামীর
ক্ষেত্রে সীমালংঘন করে, বিয়ে ধ্বংস করে,
বংশের সংমিশ্রণ ঘটায় এবং অন্যান্য খারাপ পরিনিতির দিকে
ধাবিত করে।
“খারাপ পথ” অর্থ, কতই না খারাপ পথে সেই লোক
যে এই কবিরা গুনাহ্ করার সাহস করে।
তাফসীর আস-সা’আদি, ৪৫৭।
দ্বিতীয়ত:
যিনা একটি স্বাধীন পাপ যার পরিণতি খুবই খারাপ এবং এই
গুনাহ ক্ষমার যোগ্য নয়, যদি না আপনি আল্লাহ্র কাছে
আন্তরিক ভাবে তওবা করেন। মহান আল্লাহ্
বলেছেন:
এবং যারা আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যের এবাদত করে
না, আল্লাহ যার হত্যা অবৈধ করেছেন, সঙ্গত কারণ
ব্যতীত তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না।
যারা একাজ করে, তারা শাস্তির সম্মুখীন হবে।
কেয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দ্বিগুন হবে এবং তথায়
লাঞ্ছিত অবস্থায় চিরকাল বসবাস করবে। কিন্তু যারা
তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে,
আল্লাহ তাদের গুনাহ্কে পুন্য দ্বারা পরিবর্তত করে
দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। যে তওবা
করে ও সৎকর্ম করে, সে ফিরে আসার স্থান
আল্লাহর দিকে ফিরে আসে…[সূরা আল-ফুরকান,
আয়াত: ৬৮-৭১]
এটা যিনাকারীর জন্য আন্তরিক তওবার একটি সর্ত নয়
যে সে তার যিনা কারী বা কারিণীকে বিয়ে
করবে। পক্ষান্তরে তাদের বিয়ে করার জন্য
প্রথমে প্রয়োজন তওবা করা, পরে ইচ্ছা হলে
বিয়ে করবে।
প্রকৃতপক্ষে, আপনার যিনার পাপ বৃদ্ধি পাবে না যদি তার
মা আপনার সাথে বিয়ে দিতে রাজি না হয় অথবা
আল্লাহ্র কাছে তওবা করার পরও আপনারা যদি বিয়ে না
করেন, তবে আপনার পাপ বারবে না, আল্লাহ্ সর্ব
সম্মানিত। এতে কোন দোষ নেই মেয়ের বা
তার পরিবারের পক্ষ থেকে যদি তারা যিনা কারী বা
কারিণীর সাথে বিয়ে দিতে রাজি না হয়, যদিও তাদের
মধ্যে দুশ্চরিত্রের কাজ ঘটেছে। এটা যিনার পাপ
এবং লজ্জার শরীয়তি সমাধান নয়। বরং সমাধান হচ্ছে
আন্তরিক ভাবে তওবা করা এবং নিজেকে সংশোধিত
করা (যতটুকু নিজের দ্বারা সম্ভব) ভবিষ্যতের জন্য
এবং অনেক ভাল কর্ম করা এই আশায় যে আল্লাহ্
আপনার তওবা কবুল করবেন।
তৃতীয়ত:
তওবা কারীর, তওবা তার উপর প্রদানকৃত শাস্তির
আদেশ থামিয়ে দেয় না এবং তা মাপ বা কমিয়েও
দেয়া যাবে না, যদি কারো উপর প্রমান উপস্থাপন করা
হয়।
এটা তওবার সর্ত নয় যে তার শাস্তি এই পৃথিবীতে
প্রদান করতে হবে, বরং যদি পাপীর পাপ প্রকাশ পায়
এবং এই পৃথিবীতে তার শাস্তি প্রদান করা হয় তাহলে
তা তার জন্য পরিত্রানের বিষয়। যদি আল্লাহ্ তাকে
গোপন রাখে তাহলে পরবর্তীতে এই বিষয়
আল্লাহ্র উপর নির্ভরশীল। আল্লাহ্ চাইলে তাকে
ক্ষমা করবেন অথবা তাকে শাস্তি দিবেন।
আল্লাহ্ই সর্বাপেক্ষা ভাল জানেন।

এইডস থেকে বাচতে চান ?

Aids এইডস প্রতিরোধে কার্যকর পদ্ধতি
আমরা এইডস নিয়ে সারা বিশ্বে আলোচনা হতে
দেখি। ১৯৮১ সালে আমেরিকায় সর্বপ্রথম এই
ঘাতকব্যাধি প্রকাশ পায়। পরবর্তীতে, ইউরোপ,
আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়াসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এ
রোগের বিস্তার ঘটে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ১৬৪
দেশে এইডস রোগী আছে। আপনারা জেনে
আশ্চর্য হবেন যে, ১৯৮৯ ইং থেকে এ পর্যন্ত
বিশ্বে প্রায় ২৫ মিলিয়ন বা আড়াই কোটি মানুষ
এইডসের কারণে মারা গেছে। কেবল ২০০৫
সালে সারা বিশ্বে নতুন করে ৫০ লাখ মানুষ এইচ
আইভিতে আক্রান্ত হয়েছে। গত বছর সারা বিশ্বে
প্রায় ৩০ লাখ মানুষ এইডসের কারণে মারা গেছে যার
মধ্যে শিশুর সংখ্যা ৫ লাখ। ২০০৬ সালে এইচ আইভি
আক্রান্ত লোকের সংখ্যা ছিল ৩৯.৫ মিলিয়ন, নতুন
আক্রান্ত হয়েছে ৪.৩ মিলিয়ন, মারা গেছে ২.৯
মিলিয়ন। ২০০৭ সালে এইচ আইভিতে আক্রান্ত
লোকের সংখ্যা ৩৩.০ মিলিয়ন, ২০০৭ সালে এইডস
এর কারণে মারা গেছে ২.০ মিলিয়ন মানুষ। এ সংখ্যা
নিঃসন্দেহে ভয়াবহ। তাই এইডস সম্পর্কে সবাইকে
সচেতন হওয়া আবশ্যক বলে মনে করি।
ঘাতকব্যাধি এইডস ছড়াবার কারণ:
১. এইডসে আক্রান্ত মা থেকে শিশুর দেহে এ
রোগ সংক্রমিত হতে পারে।
২. এইডস আক্রান্ত রোগীর রক্ত সুস্থ ব্যক্তির
দেহে সঞ্চালিত করলে।
৩. এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার করা সূচ,
ব্লেড ও সিরিঞ্জ ভাগাভাগি করে নেশা গ্রহণ
করলে।
৪. এইডস রোগে আক্রান্ত মায়ের দুধ খেলে
শিশু এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তেমনি
আক্রান্ত মায়ের গর্ভকালীন সময়, প্রসবের
সময়ও শিশু এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
৫. এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির অঙ্গ সুস্থ ব্যক্তির
দেহে প্রতিস্থাপন করলে সুস্থ ব্যক্তি এই
রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
৬. এইচ আইভি আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে দৈহিক মিলন
ঘটলে।
এ গজব থেকে বাঁচার উপায়:
এ গজব থেকে বাঁচার জন্য ইসলাম যে দিকনির্দেশনা
দিয়েছে, তা পালন করলে এ মহামারী থেকে
বেঁচে থাকা সম্ভব এবং দেশ ও জাতিকে রক্ষা করাও
সহজ। দিকনির্দেশনাগুলো এই-
১. যিনা, ব্যভিচার থেকে সম্পূর্ণভাবে দূরে থাকা;
কারণ যিনা ব্যভিচার ইসলামে হারাম ও ঘৃণিত বলে
ঘোষিত । আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন: তোমরা
ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না। নিশ্চয়ই এটি
অশ্লীল ও মন্দ পথ। [ সূরা আল ইসরা: ৩২]
২. দৃষ্টি হেফাজত করা। ইসলামে দৃষ্টিকে
হিফাজতের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে কারণ
পর নারীর প্রতি কুদৃষ্টির ফলে অন্যায় কাজের
প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি হয় ও তা ব্যভিচারের দিকে ধাবিত
করে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন: তুমি মুমিনদের
বলে দাও, তারা যেন স্বীয় দৃষ্টিকে সংযত রাখে
এবং নিজ লজ্জাস্থান হিফাযত করে এটি তাদের জন্য
পবিত্রতর। [ সূরা আন-নূর: ৩০] তেমনি সূরা নূরের ৩১
নং আয়াতে নারীদেরও দৃষ্টি সংযত রাখা এবং
লজ্জাস্থানের হিফাজতের ব্যাপারে একই নির্দেশ
দেয়া হয়েছে।
৩. বিবাহিত স্ত্রীর সাথেই কেবল বৈধ উপায়ে
যৌনকার্য সম্পাদন করা এবং এ পবিত্র বন্ধনের সম্মান
রক্ষা করা। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন: আর তাঁর
নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে, তিনি তোমাদের
জন্য তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের
সঙ্গীনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা
তাদের নিকট শান্তি পাও এবং তিনি তোমাদের মধ্যে
পারস্পরিক ভালোবাসা ও মমতা সৃষ্টি করেছেন। [ সূরা
আর-রুম:২১]
৪. অবিবাহিতদের উপযুক্ত ও সামর্থ্যবান হলে বিবাহ
করা। অর্থাৎ যারা অবিবাহিত, প্রাপ্তবয়স্ক ও সামর্থ্যবান,
তাদের উচিত দ্রুত বিবাহের ব্যবস্থা করা ও নিজ
যৌনাঙ্গের হিফাযত করা। রাসূল স. বলেছেন, হে যুব
সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যারা সামর্থ্যবান, তারা
যেন বিবাহ করে। [বুখারি :৫০৬৫]
৫. অসামর্থ্যদে উচিত রোজা রাখা। রাসূল স.
বলেছেন: আর যারা সামর্থ্য রাখে না, তারা রোজা
রাখবে। কারণ রোজা তাদের জন্য রক্ষাকবচ।
[ বুখারি : ৫০৬৫]
৬. ধৈর্যধারণ করা ও সংযত থাকা এবং সামর্থ্যবান হওয়ার
চেষ্টা করা। আল্লাহ তাআলা বিবাহে অসমর্থ
যুবকদের সম্পর্কে বলেন: যারা বিবাহ করার সামর্থ্য
রাখে না আল্লাহ স্বীয় অনুগ্রহে স্বচ্ছল করা
পর্যন্ত তারা যেন নিজেদের সংযত রাখে। [ সূরা
আন-নূর: ৩৩]
৭. মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্য ব্যবহার বর্জন করা।
কেননা ইসলামে তা সম্পূর্ণ নিষেধ। স্মরণ করিয়ে
দেয়া ভাল যে, ইসলাম মানব জীবনের একমাত্র
মুক্তির পথ। ইসলাম মানবজাতিকে দুনিয়া ও আখিরাতের
মুক্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের নানাবিধ আদেশ উপদেশ
প্রদান করেছে। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম ইসলামকে পরিপূর্ণভাবে পৃথিবীবাসীর
সামনে উপস্থাপন করেছেন, যাতে মানুষ
সকলপ্রকার কল্যাণ লাভ করতে পারে। তাই সমাজের
কল্যাণের কথা বিবেচনা করে ইসলাম নেশা জাতীয়
সকল বস্তুই মাদক হিসেবে আখ্যায়িত করে তা হারাম
ঘোষণা করেছে। নেশা জাতীয় বস্তুগুলোর
মধ্যে অধিক প্রচলিত হল মদ। এ মদের কুফল ও
ক্ষতি সম্পর্কে আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে:
তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে প্রশ্ন করে,
তুমি বলে দাও, এতদুভয়ের মধ্যে রয়েছে
মহাপাপ…। [ সূরা আল বাকারা: ২১৯] অপরদিকে এতে
অর্থের অপচয় হয়। আর অপচয়কারীকে
শয়তানের ভাই বলে, আল কুরআনে, আখ্যায়িত করা
হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে: নিশ্চয়ই অপচয়কারীরা
শয়তানের ভাই। [ সূরা আল ইসরা:২৭]
অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বর্তমানে
অনেক তরুণ তরুণী মাদকে আসক্ত হয়ে
পড়েছে। কৌতুহল, হতাশা, বেকারত্ব, সচেতনতার
অভাব, সঙ্গদোষ ও বিভিন্ন ব্যর্থতার কারণে তারা
প্রথমে মাদক গ্রহণ শুরু করে। মাদকের বৈশিষ্ট্য
হচ্ছে: কয়েকবার তা ব্যবহারের পরই ব্যবহারকারী
নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে। ইচ্ছা করলেই সে
আর মাদক গ্রহণ সহজে বাদ দিতে পারে না।
শরীরে শুরু হয় নানা রকম প্রতিক্রিয়া। যেমন শরীর
ব্যথা, খিঁচুনি, বমি-বমি ভাব, নাক দিয়ে পানি পড়া, শরীর
কাঁপা ইত্যাদি। সে এক পর্যায়ে উপলব্ধি করে যে,
মাদক গ্রহণ না করলে মারা যাবে। ফলে সে মাদক
গ্রহণ করতে বাধ্য হয় এবং তার পক্ষে আর মাদক
ত্যাগ সম্ভব হয় না। এবং সে আর স্বাভাবিক অবস্থায়
ফিরে আসতে পারে না। এভাবে তরুণ সমাজ দিন দিন
নিজের জীবনকে নষ্ট করে দিচ্ছে।
আপনাদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান থাকবে, আপনার
কেউ এই মরণ নেশা করবেন না। নেশা নিজের
জীবনকে নষ্ট করে দেয়। নেশার কারণে
অনেকে আজ গৃহহারা, ভিখারী ও এইচ আইভি ভাইরাস
বহন করে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন। যার বাস্তব
উদাহরণ অসংখ্য। কাজেই কখনো যদি আপনার বন্ধুরা
আপনাকে নেশা করতে বলে, তখন আপনি অব্যশই
তা গ্রহণে অস্বীকার করবেন।
মাদক বলতে : মদ, গাঁজা, আফিম, কোকেন,
হেরোইন, পেথিড্রিন, ফেনসিডিল, ভাং তাড়ি ইত্যাদি
নেশাজাতীয় দ্রব্যকে বুঝায়। চাই তা সরাসরি সেবন
করা হোক বা শিরায় ইনজেকশনের মাধ্যমে। এসবই
পরিত্যাজ্য। কারণ এ মরন নেশার ভয়াবহ ছোবলে
তরুণ সমাজের কিছু অংশ আজ বিপথগামী এবং এদের
এইচ আইভি আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যা
দেশ ও জাতির জন্য আশংকা ও উদ্বেগের কারণ।
প্রিয় পাঠকবৃন্দ। আপনারা অন্যায়, অপরাধ, অনৈতিক
কর্মকান্ড, অবাধ যৌনাচার, মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্য
ব্যবহার ও সমাজ বিরোধী কাজ থেকে যদি বিরত
থাকেন, তাহলে আপনাদের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও
আখিরাতের কল্যাণ। রয়েছে আল্লাহর বিশেষ
নিয়ামত অফুরন্ত জান্নাত। যে যুবক যুবতী নিজ
লজ্জাস্থান হেফাজত করবে, আল্লাহ তাদের
আরশের ছায়ায় স্থান দিবেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন : আল্লাহ ওই দিন সাত ধরনের
লোককে আরশের নিচে স্থান দিবেন, যে দিন
তাঁর ছায়া ব্যতীত আর কোন ছায়া থাকবে না।
(তাদের একজন হলো) ওই যুবক যাকে কোন
সুন্দরী ও সম্ভ্রান্ত নারী কু প্রস্তাব দিল, আর সে
প্রত্যুত্তরে বলল আমি আল্লাহকে ভয় করি। [ বুখারি
: ৬৬০]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যে
ব্যক্তি আমার জন্য তার দুই চোয়ালের মধ্যবর্তী
স্থান (জিহবা) আর তার দুই উরুর মধ্যবর্তী স্থান
(যৌনাঙ্গের) হিফাজতের দায়িত্ব নিবে, আমি তার জন্য
আল্লাহর কাছ থেকে জান্নাত চেয়ে নেয়ার দায়িত্ব
নেব। [ যারকানি, মুখতাসারুল মাকাসিদ: ১০৬৪]
নিম্নোক্ত উপায়ে এইচ আইভি ছড়ায় না:
এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত থালা-বাটি বা গ্লাস ও
বিছানা ব্যবহার করলে। এইচ আইভি আক্রান্ত ব্যক্তির
সাথে একই পুকুরে অজু বা গোসল করলে বা একই
সুইমিংপুলে সাঁতার কাটলে, মশা বা অন্যান্য পোকা মাকড়
কামড়ালে, একই টয়লেট ব্যবহার করলে, আক্রান্ত
ব্যক্তির সাথে এক সাথে নামাজ আদায় করলে, তার
সাথে একই পরিবারে বাস করলে। কারণ এইডস
কোন ছোঁয়াচে রোগ নয়।
এইচ আইভির জন্য যারা অধিক ঝঁকিপূর্ণ:
যাদের একাধিক যৌনসঙ্গী আছে। যেমন পতিতা ও
তাদের খদ্দর । যারা ইনজেকশন দিয়ে নেশা গ্রহণ
করে। অপরীক্ষিত রক্তগ্রহণকারী।
এইডস রোগের লক্ষণ:
এইচ আইভি শরীরের রোগ প্রতিরোধ
ব্যবস্থাকে আক্রমণ করে এবং শেষ পর্যন্ত ধ্বংস
করে দেয়। এই ধ্বংস প্রক্রিয়া ৫-১০ বছর ও তার
বেশি সময় ধরে চলতে পারে। এই সময় যদিও
একজন এইচ আইভি আক্রান্ত ব্যক্তিকে ভালো
স্বাস্থ্যের অধিকারি মনে হবে। কিন্তু ভিতর থেকে
সে তিলে তিলে শেষ হয়ে যায়। আর এই ভাইরাস
মানুষের শরীরের বাইরের বা অন্য কোন
প্রাণীর শরীরে বাস করতে পারে না।
এ রোগে আক্রান্ত রোগীর নিম্নবর্ণিত
লক্ষণগুলো দেখা যায়: রোগীর দেহের ওজন
কমে যায়, এক মাসের বেশি সময় ধরে একটানা জ্বর
থাকে, অনেকদিন পর্যন্ত শুকনো কাশি থাকে,
অনেকদিন পর্যন্ত জ্বর থাকে, অনেকদিন পর্যন্ত
পাতলা পায়খানা হয়, ঘাড় বা বগলে অসহ্য ব্যথা লাগে,
রোগীর জ্ঞান বুদ্ধি কমে যায় ও কোন কিছু
মনে রাখতে পারে না।
এইডসের ঔষধ বা চিকিৎসা:
আজ পর্যন্ত বিশ্বের কোন দেশে এ
রোগের ঔষধ, টিকা বা ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হয়নি। তাই
এইডস রোগীর মৃত্যু অবধারিত। তবে সতর্ক
থাকলে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
এইডস প্রতিরোধের উপায়:
রক্ত দেয়ার আগে রক্তে এইচ আইভি জীবানু
আছে কিনা তা পরীক্ষা করে নিতে হবে, এইডস
রোগীর ব্যবহার করা সূচ, ব্লেড বা সিরিঞ্জ
ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে, এইডস
আক্রান্ত রোগীল অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা যাবে না।
আক্রান্ত মায়ের বুকের দুধ শিশুকে দেয়া থেকে
সম্পূর্ণ বিরত থাকতে হবে, বিবাহ বহির্ভূত যৌনকাজ ও
সমকামিতা থেকে বিরত থাকতে হবে।
স্বামী ও স্ত্রী উভয়কে পরস্পরের প্রতি
বিশ্বস্ত থাকতে হবে। তাদের উভেয়ই কখনো
যেন স্বামী-স্ত্রীর বন্ধনবহির্ভূত যৌন
ভোগসম্ভোগে লিপ্ত না হয় সে ব্যাপারে খুবই
সতর্ক হতে হবে। কারণ তা সম্পূর্ণ হারাম, অত্যন্ত
ঘৃণিত-গর্হিত একটি কাজ। মাদক ও নেশাকে সম্পূর্ণ
পরিত্যাগ করতে হবে ধর্মীয় অনুশাসন ও নিয়ম
নীতি মেনে চলতে হবে, সদা সচেতন ও সতর্ক
থাকতে হবে।
ধর্মীয় অনুশাসন মেনে এইচ আইভি প্রতিরোধ
এখন আসুন আমরা কুরআন ও হাদিসের আলোকে
এইডস প্রতিরোধ সম্পর্কে ইসলামের বিধি বিধান
নিয়ে আলোচনা করি। মহান আল্লাহ এ পৃথিবীতে
মানুষকে দিক নির্দেশনাহীন ছেড়ে দেন নি, বরং
তিনি রাসূলদের মাধ্যমে সুন্দর, সুস্থ ও পবিত্র
জীবনযাপনের উত্তম পদ্ধতি অবগত করে সমাজ ও
ব্যক্তি জীবনে ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সতর্ক
করেছেন। আর যারা সেসব নিয়ম নীতি বাদ দিয়ে
অন্যের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে,
মাদকদ্রব্য সেবন করে, নেশার মাধ্যমে
জীবনকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দেয়, তারা
নিজের, দেশের ও জাতির ক্ষতি করে যায়। অথচ
কুরআন বলছে : আর তোমরা নিজেদের
জীবনকে ধ্বংসে নিপতিত করো না। [ সূরা আল
বাকারা: ১৯৫]
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন: আর তোমরা
নিজেদেরকে হত্যা করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ
তোমাদের প্রতি দয়াশীল। [ সূরা আন-নিসা: ২৯]
অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে আক্রান্ত ব্যক্তি
নিজে এবং পরিবারের সবাইকে ক্ষতির মধ্যে
ফেলে দেয়, সমাজকে কলুষিত করে, সম্পদের
অপচয় করে এবং এরা নিজেরা দেশ ও জাতির জন্য
বোঝা ও আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ মহামারী
এমনিতে আসেনি বরং অবাধ যৌনাচার, নেশাগ্রহণ ও
অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে সৃস্টি হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন: তোমরা ব্যভিচারের
কাছেও যেও না। নিশ্চয়ই এটি অশ্লীল ও মন্দ পথ।
[ সূরা আল ইসরা: ৩২] অবাধ যৌনচার, অনৈতিক কাজ
ছড়ানো ও এর কুফল সম্পর্কে কঠোর ও
সাবধানবাণী উচ্চারণ করে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ
করেন: যারা মুমিনদের মাঝে অশ্লীলতা ছড়াতে চায়
তাদের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে রয়েছে কঠিন
শাস্তি। [ সূরা আন-নূর: ১৯]
এইচ আইভি আক্রান্তদের প্রতি আমাদের করণীয়:
আল্লাহ তাআলা আমাদের যাদের সুস্থ রেখেছেন,
তাদের সর্বদা আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করা ও তার
বিধি-বিধান মেনে চলা উচিত। সাথে সাথে যারা এ
রোগে আক্রান্ত তাদের প্রতি ও আমাদের কিছু
দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে সে দিকেও দৃষ্টি রাখা
জরুরি। এ ক্ষেত্রে আমাদের দায়িত্ব হল ইসলামী
বিধি-বিধানের প্রতি তাদের মনোযোগ আকর্ষণ
করা। দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ ও অকল্যাণকর
বিষয়গুলো তাদের অবগত করা, তাদেরকে সঠিক
পথের দিকে আহ্বান করা, অসৎ কাজ থেকে
নিষেধ করা, তাদের ঘৃণা না করা, তাদের সাথে সামাজিক
আচরণ করা, কোন ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ না
করা, তাদের মানসিক সাহস ও শক্তি যাতে বৃদ্ধি পায় সে
দিকে দৃষ্টি রাখা। তাদের সেবা যত্ম করা, তাদের
সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনার সার্বিক চেষ্টা করা,
তাদের হেয় প্রতিপন্ন না করা, সর্বোপরি তাদের
সুস্থ জীবন ও সুমতির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া
করা।
আল্লাহ তাআলার দরবারে বিনীত প্রার্থনা তিনি যেন
আমাদের সকলকে এ ভয়াবহ ঘাতকব্যাধি থেকে
রক্ষা করেন। আমাদের যুব সমাজকে ভবিষ্যৎ
কর্ণধার, দেশও জাতির সেবা করার নিমিত্তে কুরআন
সুন্নাহ মোতাবেক জীবনযাপন করার, সৎ
লোকদের সাথে চলার, নিজে সচেতন থাকার ও
অপরকে সচেতন করার তাওফিক দান করেন। আমিন।