মুমিনদের প্রতি আদেশ ও নিষেধ

আল কুরআনে বর্নিত মুমিনদের আদেশ –
নিষেধ ”
মুহাম্মাদ রবিউল বাশার (পূর্ব প্রকাশিত
হওয়ার পর) (৭)
ﺍﻡ ﺗﺮﻳﺪﻭﻥ ﺍﻥ ﺗﺴﺌﻠﻮﺍ ﺭﺳﻮﻟﻜﻢ ﻛﻤﺎ ﺳﺌﻞ ﻣﻮﺳﻲ ﻣﻦ ﻗﺒﻞ ﻭﻣﻦ
ﻳﺘﺒﺪﻝ ﺍﻟﻜﻔﺮ ﺑﺎﻻﻳﻤﺎﻥ ﻓﻘﺪ ﺿﻞ ﺳﻮﺍﺀ ﺍﻟﺴﺒﻴﻞ
অনুবাদ : (১০৮)তোমরা কি তোমাদের
রাসূলের কাছে এমন প্রশ্ন করতে চাও,
যেমন মূসার কাছে ইতিপূর্বে প্রশ্ন
করা হয়েছিল? আর যে ব্যক্তি ঈমানের
পরিবর্তে কুফর গ্রহন করবে, সে সোজা পথ
থেকে বিভ্রান্ত হবে। (সূরা আল
বাকারাহ)
★আয়াতটিতে সম্মোধনের
দুটি সম্ভাবনা আছে।
(1)ইয়াহুদী (2)মুমিনগন।
★ইয়াহুদীদের সম্মোধন করলে অর্থ হবে,
হে ইয়াহুদীগন, তোমাদের পূর্বপুরুষগন
যেভাবে মুসা (আঃ) বিব্রতকর প্রশ্ন
করেছিল, (যেমন
হে মূসা ,আপনি আমাদেরকে প্রতক্ষভাবে আল্লাহকে দেখিয়ে দিন !)ঠিক
তেমনি তোমরাও কি বর্তমান
তোমাদের নিকট প্রশ্ন করতে চাও। (তাই
রাসুলুল্লাহ (সাঃ)এর কাছে আল্লাহর
নিকট থেকে সরাসরি কিতাব অবতীর্ন
করার দাবী করছো। )এটা হটকারীতামুলক
প্রশ্ন। রাসুলুল্লাহ(সাঃ) এর নিস্তব্দ করা,
নির্বাক করা ও ঠকানো মুললক্ষ্য।
ইয়াহুদীদের এটা কুফরীমুলক কর্মকান্ড।
তাই আল্লাহ বলেন
যে বা যারা ঈমানের
পরিবর্তে কুফরীকে মনোনীত করবে,
সে বা তারা সরল ও
সোজা রাস্তা থেকে বিচ্যুত হলো,
পথভ্রষ্ট হলো ও বিভ্রান্ত হলো।
ইয়াহুদীরা পথভ্রষ্ট ও বিভ্রান্ত জাতি।
★মুমিনদের সম্মোধন করলে অর্থ হবে,
হে নুতন মুমিনগন, ইয়াহুদীরা যেমন
মুসা (আঃ)কে বিব্রতকর ঈমান
বিরুধী প্রশ্ন করতো, তোমরাও
কি তাদের বিদ্বেষ মিস্রিত
অপপ্রচারে প্রভাবিত হয়ে ঈমানের
সাথে সাংঘার্ষিক বিষয়ের প্রশ্ন
তোমাদের রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর
কাছে করতে চাচ্ছো? জানা ও বোঝার
জন্য দ্বীন সম্পর্কীয় প্রয়োজনীয় প্রশ্ন
করা উৎসাহযোগ্য। কিন্তু ঠকানোর
মানষিকতা নিয়ে প্রশ্ন, সাধারন
জনগনকে ভুল ধারনা সৃষ্টির জন্য, বিব্ব্রতকর
অবস্থায় ফেলার জন্য, ধোকা দেয়ার জন্য
এবং অধিক প্রশ্ন করতে আল্লাহ ও তাৃর
রাসুল (সাঃ)নিষেধ করেছেন।
(১)আল্লাহ তায়ালা বলেন,
ﻳﺎﺍﻳﻬﺎﺍﻟﺬﻳﻦ ﺍﻣﻨﻮﺍ ﻻﺗﺴﺌﻠﻮﺍ ﻋﻦ ﺍﺷﻴﺎﺀ ﺍﻥ ﺗﺒﺪ ﻟﻜﻢ ﺗﺴﺌﻜﻢ ﻭﺍﻥ
ﺗﺴﺌﻠﻮﺍ ﻋﻨﻬﺎ ﺣﻴﻦ ﻳﻨﺰﻝ ﺍﻟﻘﺮﺍﻥ ﺗﺒﺪﻟﻜﻢ ﻋﻔﺎﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ ﻭﺍﻟﻠﻪ
ﻏﻔﻮﺭ ﺣﻠﻴﻢ0 ﻗﺪ ﺳﺌﺎﻟﻬﺎﻗﻮﻡ ﻣﻦ ﻗﺒﻠﻜﻢ ﺛﻢ ﺍﺻﺒﺤﻮﺍﺑﻬﺎﻛﺎﻓﺮﻳﻦ
অনুবাদ :(১০১) ওহে যারা ঈমান এনেছো,
তোমরা এমন বিষয় সমূহ সম্মর্কে প্রশ্ন
করনা,যদি ঐ বিষয়গুলো প্রকাশ
করে দেয়া হয়, তাহলে তোমাদের
কষ্টের কারন হবে। আর
যদি তোমরা ঐবিষয়গুলো সম্মর্কে কুরআন
অবতীর্ন হওয়ার সময়ে তোমরা প্রশ্ন করো,
তাহলে তা তোমাদের সামনে প্রকাশ
করে দেয়া হবে। আল্লাহ
তা ক্ষমা করে দিয়েছেন। আল্লাহ
মহাক্ষমাশীল, ধৈয্যশীল।
(১০২)তোমাদের
পূর্বে একজাতি ঐব্যপারে প্রশ্ন
করেছিল। তারপর তারা উহার
প্রতি কাফির হয়েগিয়েছিল।(সুরা আল
মাইদা)
(২)আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেন,
ﺍﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻳﺮﺿﻲ ﻟﻜﻢ ﺛﻼﺛﺎ ﻭﻳﻜﺮﻩ ﻟﻜﻢ ﺛﻼﺛﺎ …………ﻳﻜﺮﻩ ﻟﻜﻢ
ﻗﻴﻞ ﻭﻗﺎﻝ ﻭﻛﺜﺮﺓ ﺍﻟﺴﻮﺍﻝ ﻭﺍﺿﺎﻋﺔ ﺍﻟﻤﺎﻝ ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
অনুবাদ : নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের
তিনটি জিনিস পছন্দ করেন
এবং তিনটি বিষয় অপছন্দ করেন।
————-১)গল্প -গুজব করা, ২)বেশী প্রশ্ন
করা এবং ৩) সম্পদ নষ্ট করা অপছন্দ করেন।
(সহীহ মুসলিম)
এবং তিনটি বিষয় অপছন্দ করেন।
————-১)গল্প -গুজব করা, ২)বেশী প্রশ্ন
করা এবং ৩) সম্পদ নষ্ট করা অপছন্দ করেন।
(সহীহ মুসলিম)
(৩)হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ)
বলেন, মুহাম্মাদ (সাঃ) এর সাহাবীদের
চেয়ে উত্তম দল আর নেই।
কেননা তাঁরা রাসুল্লুল্লাহ (সাঃ) এর
নিকট মাত্র বারটি প্রশ্ন করেছিলেন।
যে প্রশ্ন এবং তার উত্তর কুরআন
মাজীদে উল্লেখ আছে।
★ ‏( 1 ‏)ﻳﺴﺌﻠﻮﻧﻚ ﻋﻦ ﺍﻻﻫﻠﺔ ﻗﻞ ﻫﻲ ﻣﻮﺍﻗﺒﺖ ﻟﻠﻨﺎﺱ ﻭﺍﻟﺤﺞ،
ﺳﻮﺭﺓﺍﻟﺒﻘﺮﺓ . ١٨٨
★ ‏(2 ‏) ﻳﻴﺌﻠﻮﻧﻚ ﻣﺎﺫﺍﻳﻨﻔﻘﻮﻥ ﻗﻞ ﻣﺎﺍﻧﻔﻘﺘﻢ ﻣﻦ ﺧﻴﺮﻓﻠﻠﻮﺍﻟﺪﻳﻦ
ﻭﺍﻻﻗﺮﺑﻴﻦ ﻭﺍﻟﻴﺘﻤﻲ ﻭﺍﻟﻤﺴﺎﻛﻴﻦ ﻭﺍﺑﻦ ﺍﻟﺴﺒﻴﻞ
★ ‏(3 ‏)ﻳﺴﺌﻠﻮﻧﻚ ﻋﻦ ﺍﻟﺸﻬﺮﺍﻟﺤﺮﺍﻡ ﻗﺘﺎﻝ ﻓﻴﻪ ﻗﻞ ﻗﺘﺎﻝ ﻓﻴﻪ
ﻛﺒﻴﺮﻭﺻﺪﻋﻦ ﺳﺒﻴﻞ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﻛﻔﺮﺑﻪ ﻭﺍﻟﻤﺴﺠﺪ ﺍﻟﺤﺮﺍﻡ ﻭﺍﺧﺮﺍﺝ
ﺍﻫﻠﻪ ﻣﻨﻪ ﺍﻛﺒﺮ ﻋﻨﺪﺍﻟﻠﻪ ﻭﺍﻟﻔﺘﻨﺔ ﺍﻛﺒﺮ ﻣﻦ ﺍﻟﻘﺘﻞ
★ ‏(4 ‏)ﻳﺴﺌﻠﻮﻧﻚ ﻋﻦ ﺍﻟﺨﻤﺮﻭﺍﻟﻤﻴﺴﺮﻗﻞ ﻓﻴﻬﻤﺎ ﺍﺛﻢ ﻛﺒﻴﺮ ﻭﻣﻨﺎﻓﻊ
ﻟﻠﻨﺎﺱ ﻭﺍﺛﻤﻬﻤﺎ ﺍﻛﺒﺮﻣﻦ ﻧﻔﻌﻬﻤﺎ
★ ‏(5 ‏) ﻳﺴﺌﻠﻮﻧﻚ ﻣﺎﺫﺍﻳﻨﻔﻘﻮﻥ ﻗﻞ ﺍﻟﻌﻔﻮ
ﺑﺴﺌﻠﻮﻧﻚ ﻋﻦ ﺍﻟﻴﺘﻤﻲ ﻗﻞ ﺍﺻﻼﺡ ﻟﻬﻢ ﺧﻴﺮ
★ ‏(6 ‏) ﻭﻳﺴﺌﻠﻮﻧﻚ ﻋﻦ ﺍﻟﻤﺤﻴﺾ ﻗﻞ ﻫﻮﺍﺫﻱ
‏( 7 ‏)ﻳﺴﺌﻠﻮﻧﻚ ﻋﻦ ﺍﻻﻧﻔﺎﻝ ﻗﻞ ﺍﻻﻧﻔﺎﻝ ﻟﻠﻪ ﻭﺍﻟﺮﺳﻮﻝ
★ ‏(8 ‏)ﻳﺴﺌﻠﻮﻧﻚ ﻋﻦ ﺫﻱ ﺍﻟﻘﺮﻧﻴﻦ ﻗﻞ ﺳﺎﺗﻠﻮ ﻋﻠﻴﻜﻢ ﺫﻛﺮﺍ
★ ‏(9 ‏)ﻳﺴﺌﻠﻮﻧﻚ ﻋﻦ ﺍﻟﺠﺒﺎﻝ ﻓﻘﻞ ﻳﻨﺴﻔﻬﺎ ﺭﺑﻲ ﻧﺴﻔﺎ
‏( ৪)আবুল আলিয়া (রঃ) বলেন, এক
ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে বলে,
হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ),
বানী ইসরাঈলদের গুনাহ যেমন
করে মোচন হতো,
তেমনিভাবে যদি আমাদের গুনাহ মোচন
হতো, তাহলে কতইনা ভাল হতো!
সাথে সাথে আল্লাহর রাসুল (সাঃ)
বলেন, হে আল্লাহ, আমরা তা চাইনে।
তারপর তিনি বলেন,
বানী ইসরাঈলরা কোন গুনাহ করলে, তার
ঘরের দরজায় লিখিত পাওয়া যেত,
সে কি গুনাহ করেছে এবং তা মোচনের
পথ কি? সে যদি দুনিয়ায় গুনাহ মোচনের
পদ্ধতি মেনে নিত ও গুনাহ স্বীকার
করতো, তাহলে তাই হতো।
নতুবা আখিরাতে গুনাহ মোচনের
পদ্ধতি মেনে নিয়ে শাস্তি ভোগের
প্রস্তুতি নিত। আর আল্লাহ আমার
উম্মাতের জন্য বলেছেন ,
ﻭﻣﻦ ﻳﻌﻤﻞ ﺳﻮﺀ ﺍﻭ ﻳﻈﻠﻢ ﻧﻔﺴﻪ ﺛﻢ ﻳﺴﺘﻐﻔﺮ ﺍﻟﻠﻪ ﻳﺠﺪ ﺍﻟﻠﻪ
ﻏﻔﻮﺭﺍ ﺭﺣﻴﻤﺎ
অনুবাদ : আর যে ব্যক্তি কোন অন্যায় কাজ
করবে অথবা নিজের উপর জুলুম করবে।
তারপর আল্লাহর নিকট
ক্ষমা প্রার্থনা করবে,
সে আল্লাহকে মহাক্ষমাশীল, দয়ালু
হিসাবে পাবে। (সূরা আন -নিসা –
আয়াত নং -১১০)
তারপর মনে রাখবে এক নামাজ
থেকে অন্য নামাজ পর্যন্ত, এক জুমুআহ
থেকে অন্য জুমুআহ পর্যন্ত মধ্যবর্তী গুনাহ
মোচন হয়ে যায়। তারপর বলেন,
যে ব্যক্তি কোন গুনাহ করার
ইচ্ছা করে সেই গুনাহ না করলে কোন
গুনাহ লেখা হবে না। আর গুনাহ
করলে একটি গুনাহ লেখা হবে।
যে ব্যক্তি কোন ভাল কাজের নিয়াত
করবে, তার জন্য একটি সাওয়াব
লেখা হবে। আর যে ব্যক্তি সেই ভাল
কাজটি করলো, তার জন্য দশটি সাওয়াব
লেখা হবে। তারপর তিনি বলেন,
তাদের উপর বেশী সহজ, না তোমাদের
উপর বেশী সহজ করা হয়েছে? না,
না ‘তোমেদের উপর বেশী সহজ
করা হয়েছে। এত দয়া ও অনুগ্রহ
করা সত্বেও যদি তোমরা ধ্বংস
হয়ে যাও, তাহলে বুঝতে হবে যে,
তোমরা নিজেরা নিজেরাই ধ্বংস
হয়েছো।
বেশী বেশী প্রশ্নকরা ও প্রয়োজনহীন
প্রশ্ন করা ভাল কাজ নয়। আল্লাহর রাসুল
(সাঃ) বলেছেন, আমি নিজের পক্ষ
থেকে না বলা পর্যন্ত তো প্রশ্ন
করবে না। এতে মনে কুফরের জন্ম
নেয়া অসম্ভব নয়। তাই আল্লাহ বলেন ,
ﺍﻟﻢ ﺗﺮ ﺍﻟﻲ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﺑﺪﻟﻮﺍ ﻧﻌﻤﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻛﻔﺮﺍ ﻭﺍﺣﻠﻮﺍ ﻗﻮﻣﻬﻢ ﺩﺍﺭ
ﺍﻟﺒﻮﺍﺭ ،ﺳﻮﺭﺓ ﺍﺑﺮﺍﻫﻴﻢ، ٢٨
অনুবাদ : তুমি কি তাদের দেখনি যে,
যারা আল্লাহর
নি,মাতকে কুফরীতে পরিবর্তন
করেছে এবং তারা নিজ
জাতিকে ধ্বংসের বাড়ীতে প্রবেশ
করিয়েছে?(সুরা ইবরাহীম, আয়াত নং২৮)
ঈমানী আচরন ত্যাগ
করে কুফরী আচরনকে মনোনীত
করলে বিভ্রান্ত, পথভ্রষ্ট ও
জাহান্নামী হতে হবে।

About আলোর কাফেলার সঙ্গী

আমি একজন মুবাল্লিগ ... আল্লাহ আমাকে কবুল করুন. আমিন

Posted on এপ্রিল 18, 2015, in আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা, আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার উপায়।, Uncategorized. Bookmark the permalink. এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান.

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান