Daily Archives: নভেম্বর 13, 2014

ইসলামী সমাজ গঠনে করণীয়ঃ মুহাদ্দিস রবিউল বাশার

সমাজ গঠনে করনীয়
মুহাম্মাদ রবিউল বাশার
(পুর্ব প্রকাশিতের পর) (৩)
পারস্পারিক সম্পর্ক ও
ভালবাসা সৃষ্টিকারী বিষয়গুলি করা :
১)সালামের ব্যাপক প্রচলন :
মুসলমান মাত্রই সালাম দেয়া, পরিচিত,
অপরিচিত,আত্মীয়, অনাত্মীয়, ধনী, গরীব, নেতা,
কর্মী সকলকে সালাম দেয়া। ছোট বড়কে, হাটা লোক
দাড়ানো লোককে, দাড়ানো লোক বসালোককে, কম লোক
বেশী লোককে সালাম দেবে। আল্লাহর রাসুল (সাঃ)
বলেছেন, আমি কি তোমাদেরকে এমন বিষয়ের
কথা বলবো, যার মাধ্যমে তোমাদের
মধ্যে ভালবাসার সৃষ্টি হবে?
তোমরা ব্যাপকভাবে সেলামের প্রচলন কর। (সহীহ
মুসলিম)
২)মুসাফাহা করা :
সালামের পর মুসাফাহা করলে ভালবাসা গাড়ি হয়।
তড়িৎ দেখা সাক্ষাতে সালাম যথেষ্ট। তড়িৎ
দেখা সাক্ষাত না হলে একটু বিলম্ব
হলে মুসাফাহা করা ভাল। মুসাফাহার মাধ্যমে গুনাহ
মাফ হয়।
৩)মুআনাকা করা :
বেশী দিন পর পর দেখা সাক্ষাত
হলে মুয়ানাকা করা সুন্নাহ। মুয়ানাকার
মাধ্যমে ভালবাসা ও আন্তরিকতা দৃড় হয়।
৪)হাদিয়া দেওয়ার প্রথার প্রচলন :
একে অপরকে সাধ্যের ভিতরে হাদিয়া –
তোহফা দেওয়ার প্রচলন করলে পরস্পরের
মধ্যে আন্তরিকতা ও ভালবাসার সৃষ্টি হয়।
তরকারীতে ঝোল
বেশী দিয়ে তরকারীতে হাদিয়া দেয়ার
নির্দেশনা আছে। ছাগলের পায়া তুচ্ছ
মনে করে হাদিয়া দেয়া ত্যাগ না করা।
৫)প্রয়োজনীয় ঋন দেয়া :
অনেক বড় লোকেরও ঋনের প্রয়োজন হয়। ঋন
দিলে আন্তরিকতা ও ভালবাসার সৃষ্টি হয়।
৬)বিপদে মুসীবাতে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসা :
বিপদে সাহায্য করলে ভালবাসার সৃষ্টি হয়।
বিপদে সেহায্য করা সাওয়াবের কাজ।
৭)মাঝে মাঝে খোজ খবর নেয়া :
কোন সমাস্যা আছে কিনা? ভাল আছে কিন? খোজ খবর
নিলে আন্তরিকতার সৃষ্টি হয়।ইত্যাদি।
আন্তরিকতা ও ভালবাসা নষ্টকারী বিষয় ত্যাগ করা :
১)ঠাট্টা বিদ্রুপ ত্যাগ করা।
২)খুৎ না ধরা।
৩)খারাপ নাম দিয়ে না ডাকা।
৪)কুধারনা না করা।
৫)দোষ অন্বেষনে না করা।
৬)গীবাত না করা।
৭)চোগলখুরী না করা।ইত্যাদি।
(গ) জামায়াত বদ্ধ থাকা :
দলবদ্ধ থাকাই সমাজ। দলবদ্ধ
থাকতে হলে নেতা থাকা ও নেতৃত্বের অধীন বৈধ
কাজে আনুগত্য করা জরুরী। সমাজ গঠন
করতে হলে নেতৃত্ব মানার মানষিকতা
মানষিকতা তৈরী করতে হবে। নেতাও সৎ হতে হবে।
সৎ নেতা প্রতিষ্ঠা করার
মানষিকতা পয়দা করতে হবে। অন্যায় কাজের
নির্দেশ দিলে বা আইন করলে সমাজের কোন
ব্যক্তি তা মানবে না,এমন
মনষিকতা পয়দা করতে হবে।
আল্লাহর রাসুল (সাঃ) বলেন, ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻟﻤﺨﻠﻮﻕ ﻓﻲ
ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺍﻟﺨﺎﻟﻖ অর্থ স্রষ্টার নির্দেশ লঙ্ঘন করে কোন
সৃষ্টির আনুগত্য করা যাবে না। (মিশকাত)
জামায়াতী জীবনই হলো সামাজিক জীবন। আল্লাহ
তায়ালা সকল মুমিনকে সকল মতপথ ত্যাগ
করে পরিপুর্নভাবে ইসলামের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ,
সংগঠিত, জামায়াতবদ্ধ সামাজিক জীবন যাপন করার
নির্দেশ দিয়ে বলেন,
ﻳﺎﺍﻳﻬﺎﺍﻟﺬﻳﻦ ﺍﻣﻨﻮﺍﺍﺗﻘﻮﺍﺍﻟﻠﻪ ﺣﻖ ﺗﻘﺎﺗﻪ ﻭﻻﺗﻤﻮﺗﻦ ﺍﻻﻭﺍﻧﺘﻢ
ﻣﺴﻠﻤﻮﻥ ﻭﺍﻋﺘﺼﻤﻮﺍﺑﺤﺒﻞ ﺍﻟﻠﻪ ﺟﻤﻴﻌﺎﻭﻻﺗﻔﺮﻗﻮﺍ. ﺳﻮﺭﺓﺍﻝ
.ﻋﻤﺮﺍﻥ
অর্থ ওহে যারা ঈমান এনেছো, তোমরা আল্লাহকে তাঁর
ভয়ের হক যেমন তেমন ভয় কর, তোমরা মুসলিম
না হয়ে মৃত্যুবরন করনা এবং আল্লাহর
রজ্জুকে ধরে জামায়াতবদ্ধ হও ও বিচ্ছিন্ন
থেকো না। (সুরা আলে ইমরান, আয়াত নং১০১)
(ঘ) পুর্ন ইসলামী জীবন
ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
পূর্ন ইসলাম প্রতিষ্ঠা না হলে এবং সমাজের
সদস্যগন ইসলাম মুতাবিক জীবন -যাপন
না করতে পারলে সমাজ সঠিক মানে গঠিত
হবে কিভাবে? সমাজের সকল মুসলিম পাঁচ ওয়াক্ত
নামাজ নিয়মিত জামায়াতের সাথে আদায় করার
ব্যবস্থা থাকবে। ধনিক শ্রেনী যাকাত ও ওশর
হিসাব করে আদায় করা ও বিতরনের
বজযবস্থা থাকবে! রমাদানের রোজা রাখবেন ও
সক্ষম ব্যক্তিরা হাজ্জান আদায় করবে। নৈতিক
শিক্ষা সহ প্রয়োজনীয় শিক্ষা ব্যবস্থা থাকবে!
পরিবার ইসলামী নিয়ম মাফিক চলবে। সমাজ
ইসলামের আলোকে চলবে। জনগনের আয়ব্যায়
শারীয়ার গন্ডিতে চলবে। ইসলাম সমর্থনীয়
সাংস্কৃতি চলবে। ইসলাম ভিত্তিক দল পরিচালিত
হবে। রাষ্ট্র ইসলামের মুলনীতিতে পরিচালিত
হবে। এইজন্য দ্বীন কায়েম
না হলে ঐভাবে পরিচালনা করা সম্ভব নয়। তাই
কর্মীদের প্রধান কাজ হলো কেন্দ্রীয় নেতৃত্ববৃন্দের
পরামর্শের মাধ্যমে নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় দ্বীন
কায়েম করা। সাধারন জনগনকে জীবনের
সর্সবক্ষেত্রে ইসলাম মানার
মানষিকতা তৈরী করা। এভাবে ইসলামী সমাজ
গঠিত হবে।
(শেষ)