Monthly Archives: নভেম্বর 2014

রাসূলের আদর্শ ৮

“রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর
মধ্যে বিশ্বমানবতার জন্য উত্তম আদর্শ
রয়েছে। ”

মুহাম্মাদ রবিউল বাশার

(৮) সামষ্টিক কাজে পরামর্শ করে কাজ
করা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর আদর্শ।
যে সকল ক্ষেত্রে মহান আল্লাহর
নির্দেশনা আছে, সে সকল
ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সাহাবীগন
(রাঃ) এর সাথে বা কারো সাথে পরামর্শ
করতেন না। যে সব সব ব্যপারে মহান
আল্লাহর. নির্দেশ নেই, সে সব
ব্যপারে তিনি পরামর্শ করতেন। পরামর্শ
করে কাজ করা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর আদর্শ
ছিল। আল্লাহ তায়ালা রাসুলুল্লাহ (সাঃ)
কে সাহাবীগন(রাঃ) এর সাথে পরামর্শ
করার নির্দেশ দিয়েছেন।
সাহাবীগন (রাঃ) এর অভ্যাস ছিল পরস্পর
পরামর্শের মাধ্যমে কর্ম সম্পাদন করা।
আল্লাহ তায়াল বলেন,
ﻢﻫﺮﻣﺍﻭ ﻱﺭﻮﺷ ﻢﻬﻨﻴﺑ
অর্থ আর তাদের (সাহাবীগন (রাঃ) এর কর্ম
তাদের পারস্পারিক পরামর্শের
মাধ্যমে সম্পন্ন হয়ে থাকে !(সূরা আশ –
শূরা, আয়াত নং ৩৮)
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন,
ﻲﻓ ﻢﻫﺭﻭﺎﺷﻭ ﺮﻣﻻﺍ ﺍﺫﺎﻓ ﺖﻣﺰﻋ ﻞﻛﻮﺘﻓ ﻲﻠﻋ
ﻪﻠﻟﺍ ﻥﺍ ﻪﻠﻟﺍ ﺐﺤﻳ ﻝﺍ ﺓﺭﻮﺳ،ﻦﻴﻠﻛﻮﺘﻤﻟﺍ ﻥﺍﺮﻤﻋ .
অর্থ আর (হে রাসূল,) তুমি বিশেষ সামষ্টিক
ব্যপারে তাঁদের (সাহাবীগন রাঃ)
সাথে পরামর্শ কর। তারপর যখন তুমি দৃঢ়
সিদ্ধান্ত নেবে, তখন আল্লাহর উপর
তাওয়াক্কুল (নির্ভর) করবে। নিশ্চয় আল্লাহ
তাওয়াক্কুল (নির্ভর) কারীদের
ভালবাসেন। (সূরা আলে ইমরান, আয়াত
নং১৫৯ )
মহান আল্লাহর নির্দেশনা থাকায়
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আদর্শ
তৈরী হয়ে গিয়েছিল এবং তাঁর চরিত্রগত
বৈশিষ্ট ছিল পরামর্শ করে কাজ করা।
নিম্মে কয়েকটি উদাহরন পেশ করা হল।
(১)বদর যুদ্ধের পূর্বে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
সাহাবীগন (রাঃ)এর অবস্থানের জন্য
একটি স্থান মনোনীত করেন, হুবাব বিন
মুনজির (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
কে জিঙ্গাসা করেন, হে আল্লাহর রসূল
(সাঃ), আপনি কি আল্লাহর ওহীর মাধ্যম এই
স্থান মনোনীত করেছেন, না, যুদ্ধ কৌশল
হিসাবে নিজস্ব মত অনুযায়ী এই স্থান
নির্বাচন করেছেন? রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
বলেন, যুদ্ধ কৌশল হিসাবে এই স্থান
নির্বাচন করেছি। তখন হযরত হুবাব (রাঃ)
বলেন, মুশরিকদের অবস্থানের
দিকে পানির স্থানের দিকে অবস্থান
নিলে ভাল হত! তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
নিজস্ব মত ত্যাগ করে হযরত হুবাব (রাঃ)
এর পরামর্শ গ্রহন করেন। (বিদায়াহ ওয়ান
নিহায়াহ)
(২)বদর যুদ্ধে সত্তরজন মুশরিক নিহত হয়
এবং সত্তরজন মুশরিক বন্দী হয়। যুদ্ধ
শেষে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সাহাবীগন (রাঃ)
এর সাথে সত্তরজন মুশরিক বন্দীদের
ব্যপারে পরামর্শ করেন, তাদের
কি করা যায়।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হযরত আবু বকর সিদ্দীক
(রাঃ)কে জিঙ্গাসা করেন, তোমার মত কি?
হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) বলেন,
তাদের নিকট থেকে মুক্তিপন
নিয়ে ছেড়ে দেয়া হোক!
তারা ভবিষ্যতে ইসলামও গ্রহন
করতে পারে এবং ঐ মুক্তিপনের
মাধ্যমে আমাদের শক্তি অর্জিত হবে।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) হযরত ওমার ফারুক (রাঃ)
কে জিঙ্গাসা করেন, তোমার মত কি?
তিনি বলন, যে মুসলিমের আত্মীয়
যে মুশরিক বন্দী, সে মুশরিক
বন্দী আত্মীয়কে সে মুসলিম হত্যা করবে।
আমি আমার আত্মীয় বন্দীকে হত্যা করবো।
কেননা তারা আল্লাহর দ্বীনকে ধ্বংস
করতে এসেছিল। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এই
পরামর্শ নিয়ে মন্তব্য করেন, হে ওমার,
তুমি হযরত নূহ (আঃ) এর মত।
তিনি কাফিরদের ধ্বংস কামনা করে বলেন,
ﻻ ﺭﺬﺗ ﻲﻠﻋ ﻦﻣ ﺽﺭﻻﺍ ﻦﻳﺮﻓﺎﻜﻟﺍ ﺓﺭﻮﺳ،ﺍﺭﺎﻳﺩ ﺡﻮﻧ .
অর্থ হে আমার রব, তুমি পৃথিবীর উপর কোন
কাফিরকে(ধ্বংস করা থেকে মুক্ত)
ছেড়ে দিও না (সূরা নূহ (আঃ,আয়াত
নং ২৬ )। আর হে আবু বকর(রাঃ), তুমি হযরত
ইবরাহীম (আঃ) ও ঈসা (আঃ) এর মত।
কেননা হযরত ইবরাহীম (আঃ) বলেছিলেন,
ﻦﻤﻓ ﻲﻨﻣ ﻪﻧﺎﻓ ﻲﻨﻌﺒﺗ ﻦﻣﻭ ﻲﻧﺎﺼﻋ ﻚﻧﺎﻓ ﺭﻮﻔﻏ
ﺓﺭﻮﺳ، ﻢﻴﺣﺭ ﻢﻴﻫﺍﺮﺑﺍ .
অর্থ অতএব যে ব্যক্তি আমার অনুসরন করবে,
সে আমারই অন্তর্ভুক্ত। আর যে ব্যক্তি আমার
নাফরমানী করবে, তাহলে তুমি তো নিশ্চয়
মহাক্ষমাশীল,অতীব দয়ালু।
(সূরা ইবরাহীম, আয়াত নং৩৬)
এবং হযরত ঈসা (আঃ) বলেছিলেন,
ﻥﺍ ﻢﻬﺑﺬﻌﺗ ﻙﺩﺎﺒﻋ ﻢﻬﻧﺎﻓ ﻥﺍﻭ ﻢﻬﻟ ﺮﻔﻐﺗ ﻚﻧﺎﻓ
ﺭﻮﻔﻐﻟﺍ ﺖﻧﺍ ﺓﺭﻮﺳ،ﻢﻴﺣﺮﻟﺍ ﺓﺪﺋﺎﻤﻟﺍ .
অর্থ (হে আল্লাহ,) তুমি যদি তাদের
শাস্তি দাও, তাহলে (আমি আর কি বলবো?)
তারা তোমারই বান্দা। আর
যদি তুমি তাদের ক্ষমা করে দাও,
তাহলে (তোমার মহৎ গুন হলো) তুমিই
মহাক্ষমাশীল, অতীব দয়ালু। (সুরা আল –
মাইদাহ, আয়াত নং১১৮ ) এই
কথা বলে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হযরত আবু বকর
(রাঃ) এর পরামর্শ কে গ্রহন করেন।(সহীহ
মুসলিম)
(৩)তৃতীয় হিজরীতে যখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
জানতে পারলেন বদর যুদ্ধের প্রতিশোধ
নেয়ার জন্য মুশরিকরা তিন হাজার
বাহিনী নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে,তখন
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সাহাবীগন (রাঃ)
কে নিয়ে পরামর্শ করলেন, তিন বাহিনীর
প্রতিরোধ মাদীনার
ভিতরে থেকে করা হবে, না,
বাহিরে যাওয়া উচিৎ? রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
এর ও প্রবীন সাহাবীদের পরামর্শ ছিল
মাদীনার ভিতরে থেকে যুদ্ধ প্রতিরোধ
করা। মুনাফিকরা এই মতের পক্ষে ছিল।
পক্ষান্তরে যাদের বদর
যুদ্ধে যাওয়া সম্ভব
হয়নি এবং যুবকরা মাদীনার
বাহিরে যেয়ে যুদ্ধের পক্ষে পরামর্শ
দেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নিজের মত
প্রত্যাহার করে যুবকদের পরামর্শ ও
মতামতকে প্রাধান্য দেন। (বিদায়াহ অন
নিহায়াহ)
(৪)খন্দকের যুদ্ধের কঠিন মুহুর্তে মুশরিক ও
ইয়াহুদীদের ঐক্যে ফাটল সৃষ্টির জন্য
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) গাতফান গোত্রের
ইয়েহুদীদের সাথে এই চুক্তি করার
কথাবার্তা বলেন, তোমরা যদি কুরাইশ
মুশরিকদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে চলে যাও,
তাহলে তোমাদেরকে মাদীনার অর্ধেক ফসল
দেয়া হবে।
ইয়াহুদীরা রাজী হলে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
আনসার নেতৃবৃন্দের সাথে পরামর্শ করেন,
নেতৃবৃন্দ বলেন, হে আল্লার রাসূল (সাঃ),
আপনি আল্লাহর ওহী পেয়ে বলছেন, না,
আমাদের সুবিধা মনে করে আপনার নিজেস্ব
মত পেশ করছেন? রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন,
এটা আল্লাহর ওহী নয়। তোমাদের
কল্যানের জন্য আমার অভিমত। তখন আনসার
নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা কাফির থাকতে অন্য
রাষ্ট্রের কর দেইনি। আর এখন
আমরা মুসলিম হয়েছি, এখন কাফিরদের কর
দিতে পারি না!(সীরাতে ইবনে হিশাম)
(৫)খন্দকের যুদ্ধের পূর্বে রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) সংবাদ পান মুশরিক ও
ইয়াহুদী সম্মিলিত
বাহিনী মিলে মাদীনার নবউত্থিত মুসলিম
রাষ্ট্র শক্তিকে ধ্বংস করার জন্য
প্রস্তুতি চলছে। তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
সাহাবগন (রাঃ) এর সাথে পরামর্শ করেন,
কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়? হযরত
সালমান ফারেসী (রাঃ) পরামর্শ দেন,
আমাদের এলাকায় বিপুল
শত্রুবাহিনী আক্রমন করার কথা
জানতে পারলে, শত্রুবাহিনী আসার
পথে গর্তখুড়ে বাধার সৃষ্টি করতাম ও
প্রতিরোধ করতাম।
আমরা শত্রুবাহিনী মাদীনা আক্রমনের
পথে গর্ত খুড়ে রাখতে পারি,
তাহলে আমরা সম্মিলিত বাহিনী প্রতিরোধ
করতে পারবো। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এই
পরামর্শ গ্রহন করেন।
(সীরাতে ইবনে হিশাম)
(৬) হুদাইবিয়ার সন্ধির
শর্তাবলী বাহ্যিকভাবে মুসলমানদের জন্য
অপমানজনক ছিল বলে তাঁরা এ
সন্ধি মেনে নিতে পারছিলেন না।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এবৎসর সন্ধির
শর্তানুযায়ী ওমরা না করে ইহরাম
ভেঙ্গে ফিরে যাওয়ার সিন্ধান্ত নেন।
এবং সাইহাবীগন (রাঃ) ইহরাম ভাঙ্গার
জন্য সঙ্গে নিয়ে আসা কোরবানীর পশু
কুরবানী করার নির্দেশ. দেন। কিন্তু সকল
সাহাবী (রাঃ) এ হুকুম পালনে ব্যথিত
ছিলেন। কেহই তাৎক্ষনিকভাবে হুকুম পালন
না করায় রাসূলুল্লাহ (সাঃ)মুমিন হযরত
উম্মে সালমা (রাঃ) এর নিকট পরামর্শের
সুরে বলেন। তখন তিনি রাসুলুল্লাহ (সাঃ)
কে পরামর্শ দেন,আপনি কুরবানী ও
মাথা মুন্ডন করে ইহরাম খুলে ফেলুন, তখন
সাহাবগন (রাঃ) বুঝবেন, এটা আল্লাহর
নির্দেশ, ব্যতিক্রম করার সম্ভানার নেই।
( বিদায়াহ অন নিহায়াহ)
রাসুলের জীবনের একটা বৈশিষ্ট হল
সামষ্টিক ও বিশেষ ব্যক্তিগত
কাজে পরামর্শ করা। পরামর্শ ভিত্তিক
কাজ করা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর আদর্শ!
(চলবে)

ইনসাফের প্রতীক রাসূলুল্লাহ সাঃ

“রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর
মধ্যে বিশ্বমানুষের. জন্য আদর্শ রয়েছে ”

মুহাম্মাদ রবিউল বাশার .

(৭)রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর মধ্যে ন্যায়
বিচার করার আদর্শ বিদ্যমান।
বিচার করা যায় কিন্তু প্রতিকুল মুহুর্তেও
ন্যায় ও ইনসাফের উপর টিকে থেকে বিচার
করার আদর্শ প্রতিষ্ঠা করা স্বাভাবিক
ব্যপার নয়। ন্যায় ও ইনসাফ থেকে বিচ্যুত
হয় প্রধান দুটি কারনে!যথা (১)পিতা –
মাতা, আত্মীয় -স্বজন, বন্ধু ও স্বার্থের
বিরুদ্ধে গেলেও ইনসাফ ও ন্যায়বিচার
বিচ্যুত হয়! (২)শত্রুর পক্ষে গেলে ইনসাফ
ও. ন্যায়বিচার বিচ্যুত হয়। মুমিনদের
দায়িত্ব হল ইনসাফ ও অন্যায়কে সমুন্নত
করা।
*** আল্লাহ বলেন,
ﺎﻳ ﺎﻬﻳﺍ ﻦﻳﺬﻟﺍ ﺍﻮﻣﺍ ﻦﻴﻣﺍﻮﻗ ﺍﻮﻧﻮﻛ ﻂﺴﻘﻟﺎﺑ
ﺀﺍﺪﻬﺷ ﻪﻠﻟ ﻮﻟﻭ ﻲﻠﻋ ﻢﻜﺴﻔﻧﺍ ﻭﺍ ﻦﻳﺪﻟﺍﻮﻟﺍ
ﻦﻴﺑﺮﻗﻻﺍﻭ
অর্থ ওহে যারা ঈমান এনেছো,
তোমরা ন্যায় ও ইনসাফ.কায়েমকারী,
আল্লাহর উদ্দেশ্যে সাক্ষ্যদাতা হও, যদিও
নিজেদের বা পিতামাতার ও নিকট্-
আত্মীয়দের বিরুদ্ধে যায়। (সুরা আন নিসা,
আয়াত নং)
*** আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন,
ﺎﻳ ﺍﻮﻨﻣﺍ ﻦﻳﺬﻟﺍﺎﻬﻳﺍ ﻦﻴﻣﺍﻮﻗ ﺍﻮﻧﻮﻛ ﻪﻠﻟ ﺀﺍﺪﻬﺷ
ﻂﺴﻘﻟﺎﺑ ﻻﻭ ﻡﻮﻗ ﻥﺎﻨﺷ ﻢﻜﻨﻣﺮﺠﻳ ﻲﻠﻋ ﻻﺍ ﺍﻮﻟﺪﻌﺗ
অর্থ ওহে যারা ঈমান এনেছো,
তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে দন্ডায়মান,
ন্যায়ের সাক্ষ্যদাতা হও। আর কোন জাতির
শত্রুতা যেন তোমাদের ন্যায়বিচার ও
ইনসাফ না করতে উৎসাহ না দেয়! (সুরা আল
-মাইদাহ, আয়াত নং )
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সারা বিশ্বের সকল
ব্যপারে আদর্শ ব্যক্তিত্ব। বিচারের
ক্ষেত্রে তিনি একজন আদর্শ বিচারক।
আত্মীয়তা, বন্ধুত্ব, জাতীয়তা, সম্পদ কোন
কিছুই রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে ন্যায় ভ্রষ্ট ও
ইনসাফ বিচ্যুত করতে পারেনি।
নিম্মে উদাহরন পেশ করা হল।
(ক) এক নামধারী মুসলিম ও একজন
ইয়াহুদীর মধ্যে বিবাদ হয়।
ইয়াহুদী বলে বাহৃিক মুসলিমকে,
চলো বিচার -ফায়সালর জন্য
আমরা মুহাম্মাদের কাছে যাই।
নামধারী মুসলিম ইয়াহুদীকে বিচার –
ফায়সালার জন্য ইয়াহুদী নেতা কা’ব বিন
আশরাফের কাছে যাওয়ার জন্য বলে।
পরিশেষে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর
কাছে যায়। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সবকিছু
শোনার পর ইয়াহুদীর পক্ষে রায় দেয়।
(তাফসীরের জালালাইন, তাফসীরের
বাইজাবী, তাফসীরের কাশ্শাফ ইত্যাদি)
মুসলমান -অমুসলমান না দেখে সত্য ও ন্যায়
দেখে ইয়াহুদীর পক্ষে হলেও রায়
দিয়েছেন।
(খ) মাক্কা বিজয়ের বৎসর কুরাইশ
বংশীয়া এক
মহিলা চুরি করে বলে প্রমানিত
হলে কুরাইশ গোত্রের লোকেরা চোরের
হাতকাটা বাদ দিয়ে অন্যকিছু
ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করার জন্য হযরত
উসামা বিন যায়েদ (রাঃ)কে রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) এর নিকট পাঠায়। রাসুলুল্লাহ (সাঃ)
সাহাবী (রাঃ) কে সমবেত করে বক্তব্য
পেশ করেন। বলেন ইতিপুর্বের
জাতিরা ধ্বংস হয়ে গেছে এজন্য যে, ভদ্র ও
উচ্চস্তরের ব্যক্তি চুরি / অপরাধ
করলে ছেড়ে দেয়া হতো এবং নীচু স্তরের
লোক চুরি/অপরাধ
করলে শাস্তি দেয়া হতো। শুনে রাখ,
মুহাম্মাদের
কন্যা ফাতিমা যদি চুরি করতো,
তাহলে আমি স্বয়ং তার হাত কর্তন করতাম।
(সহীহ মুসলিম)
পবিত্র হাদীস ও
সীরাতে গ্রন্থে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর
ফায়সালা ও বিচারের আদর্শ বিদ্যমান।
(গ) হযরত আলী (রাঃ) ও হযরত মায়ায বিন
যাবাল (রাঃ) কে বিচারক নিয়োগ দেয়ার
সময় নিয়ম -পদ্ধতি প্রশিক্ষন দেন।
আদর্শ শ্রেষ্ট বিচারক হলেন বিশ্বনাবী,
শ্রেষ্ঠনাবী এবং শেষনাবী মুহাম্মাদ
মুস্তফা (সাঃ)।