আল্লাহর সাহায্য পাওয়া উপায়।

আল্লাহর সাহায্য পাওয়া উপায়।

মুহাদ্দীস রবিউল বাশার
(পুর্ব প্রকাশিত হওয়ার
পর) (6)

(4)আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার চতুর্থ শর্ত
হলো আল্লাহর দ্বীন মেনে মাজলুম হওয়া।
জীবনের সর্বক্ষেত্রে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সাঃ)
এর আনুগত্য করতে যেয়ে এবং পরিপুর্ন দ্বীন
মানতে যেয়ে জুলুমের শিকার হলে এক
পর্যায়ে আল্লাহর সাহায্য পাওয়া যায়।
যারা আল্লাহকে রব মেনে জীবনের
সর্বক্ষেত্রে সে মুতাবিক জীবন যাপন করার
চেষ্টার কারনে জুলুমের সম্মুখীন হয়,
নির্যাতনের মুখোমুখী হয়, তাদের সাথে লড়াই শুরু
করা হয়, দেশ থেকে বহিস্কারের ষড়যন্ত্র
করা হয়, বহিস্কার করা হয়। তাদের অপরাধ
হলো একমাত্র আল্লাহকে রব মেনে তাঁরই
নির্দেশদনা অনুযায়ী জীবন যাপন করা। তাঁরই
দ্বীনের দাওয়াত দেওয়া ও তাবলীগ
করা এবং তাঁরই পরিপুর্ন দ্বীন প্রতিষ্ঠার
চেষ্টা করা।
আল্লাহ বলেন,
ﻭﻣﺎ ﻧﻘﻤﻮﺍ ﻣﻨﻬﻢ ﺍﻻ ﺍﻥ ﻳﺆﻣﻨﻮﺍ রআ থ্রঅ
ﺑﺎﻟﻠﻪ ﺍﻟﻌﺰﻳﺰﺍﻟﺤﻤﻴﺪ তারা (বাতিলের অনুসারীরা) তাঁদের
(মুমিনদের) থেকে অধিক প্রশংসিত
অপরাজয়ী শক্তিধর আল্লাহর উপর ঈমান
আনা ছাড়া অন্য কোন কারনে প্রতিশোধ নেয়নি।
(সুরা বুরুজ, আয়াত নং 8)
মহান আল্লাহর উপর ঈমান আনাই ছিল অপরাধ।
ঈমান আানার অপরাধে তাদের উপর নির্যাতন ও
জুলুম করা হয়েছিল। এ সময় আল্লাহর সাহায্য
আগমন করে।
মহান আল্লাহ নির্যাতিত মুমিনদের সাহায্যের
কথা উল্লেখ করে বলেন,
ﺍﺫﻥ ﻟﻠﺬﻳﻦ ﻳﻘﺎﺗﻠﻮﻥ ﺑﺎﻧﻬﻢ ﻇﻠﻤﻮﺍ ﻭﺍﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻲ
ﻧﺼﺮﻫﻢ ﻟﻘﺪﻳﺮ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﺍﺧﺮﺟﻮﺍ ﻣﻦ ﺩﻳﺎﺭﻫﻢ ﺑﻐﻴﺮ ﺣﻖ ﺍﻻ
ﺍﻥ ﻳﻘﻮﻟﻮﺍ ﺭﺑﻨﺎ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﻟﻮﻻ ﺩﻓﻊ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﺑﻌﻀﻬﻢ
ﺑﺒﻌﺾ ﻟﻬﺪﻣﺖ ﺻﻮﺍﻣﻊ ﻭﺑﻴﻊ ﻭﺻﻠﻮﺍﺕ ﻭﻣﺴﺎﺟﺪ ﻳﺬﻛﺮ
ﻓﻴﻬﺎ ﺍﺳﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﻛﺜﻴﺮﺍ ﻭﻟﻴﻨﺼﺮﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﻦ ﻳﻨﺼﺮﻩ ﺍﻥ
ﺍﻟﻠﻪ ﻟﻘﻮﻱ ﻋﺰﻳﺰ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﺍﻥ ﻣﻜﻨﺎﻫﻢ ﻓﻲ ﺍﻻﺭﺽ
ﺍﻗﺎﻣﻮﺍ ﺍﻟﺼﻠﻮﺓ ﻭﺍﺗﻮﺍ ﺍﻟﺰﻛﻮﺓ ﻭﺍﻣﺮﻭﺍ ﺑﺎﻟﻤﻌﺮﻭﻑ
ﻭﻧﻬﻮﺍ ﻋﻦ ﺍﻟﻤﻨﻜﺮ
অর্থ (39)তাদের যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হয়েছে,
যাদের সাথে (কাফিরদের পক্ষ থেকে) যুদ্ধ
করা হচ্ছে, কেননা তারা (মুমিনগন)নির্যাতিত।
আর নিশ্চয় আল্লাহ তাদেরকে সাহায্য
করতে সক্ষম।
(40)যাদেরকে (যে নির্যাতিত মুমিনদেরকে)তাদে
র বাড়ী ঘর থেকে অন্যায়ভাবে বহিস্কার
করা হয়েছে শুধু এই অপরাধে যে,
তারা বলে “আমাদের রব আল্লাহ। আল্লাহ
যদি মানবজাতির একদলকে অপর দল
দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তবে (খৃষ্টানদের)
নির্জন গির্জা, ইবাদাতখানা, (ইয়াহুদীদের)
উপাসনালয় এবং মসজিদসমুহ বিধ্বস্ত হয়ে যেত,
যেগুলোতে আল্লাহর নাম অধিক স্মরন করা হয়।
আল্লাহ নিশ্চয়ই তাদেরকে সাহায্য করবেন,
যারা আল্লাহর সাহায্য করে।
নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী শক্তধর।
(41)(সেই নির্যাতিত মুমিনরা) এমন লোক,
যাদেরকে আমি পৃথিবীতে শক্তিসামর্থ দান
করলে, তারা নামাজ কায়েম করবে, যাকাত
দেবে, সৎকাজে আদেশ
করবে এবং অসৎকাজে নিষেধ করবে।
(সুরা আলহা্জ্জ)
উপরোক্ত তিনটি আয়াতে বলা হয়েছে,
মুমিনরা মাজলুম ও নির্যাতিত, তাদের
সাথে কাফিরদের পক্ষ থেকে লড়াই শুরু
করা হয়েছে, তাই মাজলুম মুমিনদের লড়াই করার
অনুমতি দেয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় আয়াতে বলা হয়েছে,নির্যাতিত
মুমিনদের অন্যায়ভাবে তাদের
ঘরবাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়েছে! তাদের
অন্যায় হলো তারা আল্লাহকে নিজেদের রব
মেনে জীবনযাপন করে। পৃথিবীতে আল্লাহ
একদলকে অন্যদল দিয়ে প্রতিরোধ করেন।
আল্লাহকে সাহায্যকারীদের আল্লাহ অবশ্যই
সাহায্য করবেন। আল্লাহকে সাহায্য করার অর্থ
আল্লাহকে রব মানা, নির্যাতিত হয়েও তা ত্যাগ
না করা, দেশ ত্যাগে বাধ্য হয়েও আল্লাহকে রব
মেনে অটল থাকা এবং যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকা,
ক্ষমতা পেলে নামাজ কায়েম করা, যাকাত দেয়া,
সৎকাজে আদেশ ও অন্যায় কাজে নিষেধ
করে যাওয়া, এগুলো মুলত আল্লাহকে সাহায্য করার
শামিল। এ দায়িত্ব পালন
করতে যেয়ে নির্যাতিত হলেও এবং মাজলুম হলেও
তারা দায়িত্ব ত্যাগ করেনা, তাই আল্লাহ্ তাদের
সাহায্য করেন।
তৃতীয় আয়াতে বলা হয়েছে, নির্যাতিত মুমিনগন
ক্ষমতা লাভ করলে অন্যায় পথে ক্ষমতা ব্যবহার
করেনা। বরং আল্লাহর হক এবং বান্দার হক আদায়
করবে এবং অন্যায় দুর করা ও ন্যায়কে চালু
করবে।
দ্বীন মুতাবিক
চলনেওয়ালা এবং দ্বীনকে চালুকরার জন্য
চেষ্টাকারী ব্যক্তিদের দ্বীনের
সাহায্যকারী বলা হয়। দেশ থেকে বহিস্কৃত
হয়েও, নির্যাতিত হয়েও দ্বীনের আমল, দাওয়াত
ও তাবলীগ এবং দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজ ত্যাগ
করেনা, তারা আল্লাহকে সাহায্য করে, আল্লাহ
তাদেরকে অবশ্যই সাহায্য করবেন।
আল্লাহ বলেন, ﻳﺎﻳﻬﺎﺍﻟﺬﻳﻦ ﺍﻣﻨﻮﺍ ﺍﻥ ﺗﻨﺼﺮﻭﺍ ﺍﻟﻠﻪ
ﻳﻨﺼﺮﻛﻢ ﻭﻳﺜﺒﺖ েহও থ্রঅ
ﺍﻗﺪﺍﻣﻜﻢ যারা ঈমান এনেছো,
যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য করো,
তাহলে আল্লাহ তোমাদের সাহায্য করবেন
এবং তোমাদের পা দৃঢ় রাখবেন। (সুরা মুহাম্মাদ,
আয়াত নং 7)

About আলোর কাফেলার সঙ্গী

আমি একজন মুবাল্লিগ ... আল্লাহ আমাকে কবুল করুন. আমিন

Posted on সেপ্টেম্বর 20, 2014, in আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার উপায়।. Bookmark the permalink. এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান.

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান